আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:৪২
গোসলখানা বানাতে মাটি খুঁড়তেই মিলল গলিত দেহাবশেষ
প্রতিনিধি, জয়পুরহাট

গোসলখানা বানাতে মাটি খুঁড়তেই মিলল গলিত দেহাবশেষ

ছবি: দৈনিক বাংলা

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী বাজার এলাকার একটি বাড়ির গোসলখানা বানানোর জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে গলিত দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে শনিবার রাত ৯টার দিকে পুলিশ গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা বলছেন, গত ২২ এপ্রিল ধরঞ্জী গ্রামের নাইম হোসেন (২৩) নামে এক তরুণ নিখোঁজ হয়েছিলেন। এটি তারই মরদেহ হতে পারে। তবে ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত সঠিক পরিচয় জানা যাবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, দুজন রাজমিস্ত্রী এবং দুইজন শ্রমিক নিয়ে বাড়ির মালিক সামছুল ইসলাম নির্মাণের কিছু কাজ করছিলেন। এ সময় বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া ফাঁকা জায়গায় গোসলখানা বানানোর জন্য এক শ্রমিক মাটি খুঁড়তে গিয়ে সেখানে কাপড় ও দুর্গন্ধ পেয়ে অন্যদের জানান। পরে বাড়ির মালিক পুলিশে খবর দেন।

এদিকে একই গ্রামের মৃত মাসুদ রানার ছেলে নাইম হোসেন নামের এক তরুণ চলতি বছরের ২২ এগ্রিল রাত ৮টার দিকে ধরঞ্জী বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাইরে বের হওয়ার পর আর তার খোঁজ মেলেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে ওই মাসের ২৫ এপ্রিল নাইমের মামা ওহেদুল ইসলাম পাঁচবিবি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি করার সাড়ে ৪ মাস পার হলেও নাইমের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

নির্মাণ শ্রমিক নবিউল ইসলাম বলেন, ‘কাজ করতে করতে সিমেন্টের মসলা বেশি হয়েছিল। তখন গোসলখানার স্থান খোঁড়ার জন্য আমাকে বলা হলো। সেখানে লাউ, কুমড়া, পুঁইশাকের গাছ ছিল। এগুলো একসঙ্গে কঞ্চি দিয়ে ঘেরা ছিল। এসব তুলে ফেলে দেয়ার পর দেখি ওই জায়গার মাটি শুধু শুধু দেবে যাচ্ছে। এরপর সেখানে কোদাল দিয়ে খুঁড়তে গেলেই কাপড়ের উপস্থিতি এবং দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। তখন আমি আমাদের হেড মিস্ত্রিকে বিষয়টি জানাই। উনি এসে খোঁড়া শুরু করলে আরও দুর্গন্ধ বের হয়। তখন বিষয়টি বাড়িওয়ালাকে বলার পর থানায় জানানো হয়। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে।’

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘যেখানে গলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। সেটি ফাঁকা স্থান ছিল। ওই বাড়ির মালিক বাইরে থাকতেন। তিনি বাড়িতে এসে রাজমিস্ত্রী লাগিয়ে নির্মাণের কিছু কাজ করছেন। ফাঁকা স্থানে গোসলখানা বানানোর জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে কাপড় ও দুর্গন্ধ পেয়ে আমাদের খবর দিলে মাটি খুঁড়ে গলিত মরদেহ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এটি পুরুষের মরদেহ। এগুলোর নমুনা ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হবে। রিপোর্ট পেলে সঠিক পরিচয় জানা যাবে।’

ওসি আরও বলেন, ‘নাইম হোসেনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এটি তার লাশ কিনা ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে। ওই বাড়ির মালিক পুলিশি হেফাজতে আছে। তবে বাড়ির ভাড়াটিয়া রাজ্জাক ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে পাওয়া যাচ্ছে না।’

জয়পুরহাট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইশতিয়াক আলম বলেন, ‘ধরঞ্জী বাজার এলাকায় একটি বাড়িতে মৃতদেহ পাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে এসে সেটি উদ্ধার করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ গলিত এবং কিছু হাড় পাওয়া গেছে। আমরা এই মরদেহের নমুনা সংগ্রহ এবং আলামত জব্দ করেছি। পরবর্তীতে মরদেহ শনাক্তকরণ সাপেক্ষে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব। সেইসঙ্গে এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে।’