জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ববাসী এক নামে চিনবে, এমন ভাবমূর্তি তৈরি করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়ধ্বনি মঞ্চে রংপুর ডিভিশনাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত নবীনবরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রত্যাশার কথা বলেন।
প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন এই তিনটি মোটোকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করি। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দিক থেকে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বের অবস্থা থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এপিএ র্যাংকিংয়ে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ১৪তম হয়েছে। অথচ এর আগে ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯তম অবস্থানে ছিল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। আমি যোগদানেরপর ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯তম অবস্থানে আসে এবং এবার ১৪তম অবস্থান দখল করতে সক্ষম হয়। আগামীতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় আরও এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বে এমন ভাবমূর্তি তৈরি হবে বিশ্ববাসী এক নামে চিনবে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতে ড. সৌমিত্র শেখর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের শহীদদের প্রতি এবং জেল হত্যা দিবস ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন বাঙালির জন্য সংগ্রাম করেছেন, বাঙালির আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছেন। তিনি ক্ষুধা ও দারিদ্যমুক্ত এক উন্নত বাংলাদেশের নকশা করেছিলেন। কিন্তু ঘাতকদের বুলেট তার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন হতে দেয়নি।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে নিজের জন্য না ভেবে দেশের জন্য ভাবতে এবং অন্যের উপকারে কাজ করতে রংপুর বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান উপাচার্য।
ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন এবং তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌঁছে গেছে এবং বাংলাদেশ এখন স্মার্ট বাংলাদেশের নিকটে। প্রযুক্তি ও জ্ঞাননির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
রংপুর বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য আরও বলেন, আমরা জানি তোমরা একে অন্যের প্রতি অত্যন্ত সহনশীল। তোমরা শুধু রংপুরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার প্রতি আন্তরিক হবে। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেখানে কোনো দারোয়ান থাকবে না, থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। এই ক্যাম্পাস হবে একটি নন্দন কানন। জয় বাংলা এবং জয় বঙ্গবন্ধু নামে দুইটি গেইট থাকবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কারও পরিচয় যখন শুনবে, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তখন যেন ইতিবাচক ধারণা তৈরি, এমন অবস্থায় আমরা নিয়ে যেতে কাজ করছি।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন ভাবমূর্তি তৈরির জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। উপাচার্য র্যাগিং বিষয়ে কঠোর অবস্থান এবং এই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো টলারেন্সের কথা উল্লেখ করে বলেন, তোমাদের যদি কেউ কখনো শারীরিক বা মানসিকভাবে নির্যাতন করে তাহলে তোমরা প্রক্টরিয়াল বডির যে কাউকে জানাবে। র্যাগিংয়ের মতো কোন ঘটনা ঘটলে আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি দেব।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর তপন কুমার সরকার। রংপুর ডিভিশনাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল প্রামাণিক অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভার পর শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা