বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বর্তমান সরকার গায়ের জোরে, গুণ্ডামি করে দেশটা দখল করে রেখেছে। এই দেশকে দখলমুক্ত করতে হবে।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রোববার দুপুরে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে খালেদা জিয়া ও আমানউল্লাহ আমানের মুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) প্রশাসন দখল করেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে দখল করেছে। আইন আদালত, শিক্ষাঙ্গন দখল করেছে। প্রমাণ চান? এইসব জায়গায় গেলেই বুঝতে পারবেন। পুরা দেশটাই তারা দখল করে নিয়েছে।’
অবস্থান কর্মসূচিতে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এখানে যারা আছে প্রায় সবাই ছাত্রনেতা। তারা এরশাদের হাত থেকে এই দেশকে দখলমুক্ত করেছে। ভেবেছিল এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আবার গণতন্ত্রের মুখোশধারীরা শেখ হাসিনাকে সামনে এনে দেশটাকে দখল করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই দখলে কারা কারা ছিল। কোন কোন পত্রিকা ছিল। কোন কোন দেশ ছিল তা আপনারা জানেন। সে সব দেশ কিন্তু এখন আর এই দখলকারীদের পাশে নাই। এখন চারপাশে কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে এই সরকার আর থাকতে পারবে না। নিশ্চিতভাবে এই সরকার আর থাকছে না। এই সরকারকে অনতিবিলম্বে বিদায় নিতে হবে। খুব বেশি হলেও অক্টোবরের মধ্যে এ সরকারকে বিদায় নিতে হবে। দেশে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনেকে ক্ষমতায় আসবে তা আপনারা জানেন। আওয়ামী লীগ জানে। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন জানে তাই ভয় পাওয়ার কিছু নাই।'
শেখ হাসিনার উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাসা আপনাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল। ব্যাংকে টাকা ও সোনা আপনাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়া আপনাকে আইনের আশ্রয় দিয়ে দেশে মুক্ত করে দিয়েছিল। কিন্তু আপনি তাকে (খালেদা জিয়া) বিপরীত দিকে নিয়ে গেছেন। এ জন্য আমি আপনাকে কিছু বলবো না। বিএনপি দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে, সাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠা করবে, কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ৭১ সালে যে কনসেপ্ট ছিল, যে চিন্তা ভাবনা ছিল তা প্রতিষ্ঠা করবে। এর মধ্য দিয়ে যদি আপনাদের আইন আদালত বিচারের সম্মুখীন হতে হয় তাহলে হবেন।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এটা কোনো নির্বাচন হয়নি। তাই সামনের নির্বাচনে মানুষের কথা বলা বন্ধ করার জন্য সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছে। কথা একটাই এ সরকারকে আমরা বিদায় করবো। দেশে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠিত করবো। একটি ভাল নির্বাচন করবো।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘খালেদা জিয়ার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে বন্দি করে রেখেছে সরকার। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে দেশে আসতে দিচ্ছেন না। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আর তার জন্য এই সরকারের বিদায় করতে হবে। আর এই সরকারের বিদায় করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে।’
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, সাবেক এমপি সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মো. আনোয়ার,পেশাজীবী নেতা আবু হানিফ, মুক্তার আখন্দ প্রমুখ।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা