বর্তমানে ৫ ঘণ্টা বন্ধ থাকলেও সিএনজি স্টেশনগুলোকে ৭ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে চায় পেট্রোবাংলা। গ্যাস-সংকটের কারণে সিএনজি স্টেশনগুলোতে এই রেশনিং করার বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার। গত ১ মার্চ থেকে সিএনজি স্টেশনগুলো সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টা বন্ধ থাকে সিএনজি স্টেশনগুলো। এর আগে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা গ্যাস বিক্রি বন্ধ ছিল।
সিএনজি স্টেশন আরও ২ ঘণ্টা বেশি বন্ধ রাখতে সিএনজি স্টেশন মালিকদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার বৈঠক করে পেট্রোবাংলা। তবে সিএনজি স্টেশন মালিকরা পেট্রোবাংলার এই প্রস্তাব মেনে নেননি।
সিএনজি মালিকরা বলেছেন, রেশনিংয়ের কারণে ৫ ঘণ্টা গ্যাস বিক্রি করা যায় না। এর মধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণেও গ্যাস বিক্রি বন্ধ থাকে। সব মিলিয়ে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অনেক স্টেশনে সিএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকে। নতুন করে আরও ২ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকলে সব মিলিয়ে গ্রাহক গ্যাস পাবে না ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা। এতে সাধারণ মানুষ হয়রানিতে পড়বেন।
সিএনজি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি ফারহান নূর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গত মঙ্গলবার বৈঠকে পেট্রোবাংলা গ্যাস সংকটের কথা জানিয়ে আরও ২ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখার কথা বলেছে। আমরা রাজি হয়নি।’
ফারহান নূর বলেন, বর্তমানে সিএনজি স্টেশনগুলো মোট সরবরাহ করা গ্যাসের মাত্র ৩ শতাংশ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ দাম দেয়। এই অল্প গ্যাসে রেশনিং বাড়িয়ে খুব বেশি লাভ হবে না। বরং গাড়িতে তেল ব্যবহারের পরিমাণ বাড়বে যা দেশের পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে বলেন, সিএনজি স্টেশন মালিকদের ডাকা হয়েছিল বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে সরকারের অবস্থান জানাতে। তিনি বলেন, ‘তাদের বুঝতে হবে সরকার বাধ্য হয়েই রেশনিংয়ে যাচ্ছে। তাতে হয়তো ব্যবসায় তারতম্য হবে, তবে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত সবার মঙ্গলের জন্য।’
আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট মার্কেটে গ্যাসের দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার পর গ্যাস আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। তবে রপ্তানির কথা মাথায় রেখে শিল্পে সরবরাহ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে জ্বালানির অভাবে গ্যাসচালিত কেন্দ্রগুলোর অনেকগুলো বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। এর প্রভাবে দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েছে প্রকটভাবে।
দেশে বর্তমান গ্যাসের চাহিদা ৪২০ কোটি ঘনফুট। পেট্রোবাংলা সরবরাহ করছে ২৬৭ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে এলএনজি থেকে আসছে ৩৮ কোটি ঘনফুট, যার পুরোটাই কাতার থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কেনা হয়।
দেশে সিএনজি স্টেশনের সংখ্যা প্রায় ৫০০। প্রতি ইউনিট বিক্রি করা হয় ৪৩ টাকায়।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা