দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত জলসীমায় ভাসমান বেড়া বসিয়েছে চীন। গতকাল রোববার এ অভিযোগ তুলে ফিলিপাইন বলেছে, সাগরে ফিলিপাইনের জেলেদের প্রবেশ ও মাছ ধরা ঠেকাতেই চীন এমন কাণ্ড করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, দক্ষিণ চীন সাগরের স্কারবোয়াফ শোয়াল নামের এলাকার একটি অংশে বসানো হয়েছে এই ভাসমান বেড়া। ফিলিপাইনের কোস্টগার্ডের মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘এক্স’ এ তথ্য জানান। মুখপাত্র জানান, শোয়াল দ্বীপ এলাকার জলসীমায় প্রায় ৩০০ মাইল দীর্ঘ ভাসমান বেড়া বসানো হয়েছে। বেড়ার কারণে ফিলিপাইনের জেলেরা মাছ ধরার জন্য সেখানে যেতে পারছেন না। ফিলিপাইনের কোস্টগার্ড এবং মৎস্য ও সামুদ্রিক সম্পদবিষয়ক ব্যুরো চীনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন অনুসারে স্কারবোয়াফ শোয়াল কোনোভাবেই চীনের সার্বভৌম এলাকার মধ্যে পড়ে না দাবি করে ফিলিপাইনের কোস্টগার্ডের মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের সমুদ্র অধিকার ও মেরিটাইম ডোমেইন রক্ষার স্বার্থে এই ইস্যুতে ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ চীন সাগরের উপকূলবর্তী অন্যান্য দেশের সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
রয়টার্স জানায়, ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় চীনের দূতাবাস সাগরে ভাসমান বেড়া তৈরি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সমগ্র দক্ষিণ চীন সাগরে প্রায় একক মালিকানা দাবি করে চীন। সাগরের সীমানা নিয়ে চীনের সঙ্গে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, জাপান, ব্রুনেই, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের দীর্ঘ সময় ধরে বিরোধ রয়েছে। এ সব দেশও দক্ষিণ চীন সাগরে সীমানা নিয়ে পাল্টা দাবি করছে। সম্প্রতি দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বেইজিংয়ের নতুন মানচিত্র ঘিরে এ সব সাগরপাড়ের দেশগুলো আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। কারণ মানচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে- সার্বভৌম, এক্সক্লুসিভ এবং ইকোনমিক- তিনপর্যায়ে সাগরটির প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা নিজেদের বলে দাবি করেছে চীন। ২০১২ সালে স্কারবোয়াফ শোয়াল দ্বীপটি দখল করে নেয় চীন। তারা সেখানকার জলসীমা থেকে ফিলিপাইনের জেলেদের তাড়িয়ে দেয়। তবে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের আমলে ম্যানিলা-বেইজিং সম্পর্ক কিছুটা উন্নয়ন হয়। দুতার্তের আমলে ফিলিপাইনের জেলেদের শোয়ালের জলসীমায় প্রবেশের অনুমতি দেয় চীন। কিন্তু গত বছর দুতার্তের উত্তরসূরি হিসেবে ফার্ডিনান্ড মার্কোস জুনিয়র ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ধারাবাহিক অবনতি ঘটেছে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা