আপডেট : ২ অক্টোবর, ২০২৩ ০৮:১৫
কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় সিঁড়ি দিয়ে
বরগুনা প্রতিনিধি

কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় সিঁড়ি দিয়ে

বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নামেশিপাড়া গ্রামে ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে খালের ওপর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ হয়। সেতুটি নির্মাণ হলেও দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়নি। এ কারণে এ সেতুতে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হয়। এতে শিক্ষার্থীসহ ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই এলাকার হাজার হাজার মানুষ। চলাচল না করতে পারায় কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি।

এলাকাবাসী বলেন, এক বছর হয়ে গেছে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে অথচ সংযোগ সড়ক নেই। কাঠের সিঁড়ি দিয়ে যেন পাহাড় বেয়ে উঠতে হয়। এ সেতু নির্মাণের পর জনগণের দুর্ভোগ আরও চরমে ওঠে। খাল পার হওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ প্রতিদিন সিঁড়ি বেয়ে সেতু দিয়ে চলতে বাধ্য হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর দুই পাশে মাটির কাঁচা রাস্তা। এ সেতু দিয়েই প্রতিদিন স্থানীয় রাখাইন শিশু শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ যাতায়াত করে। অথচ বাইসাইকেল নিয়ে ওঠা যায় না সেতুটিতে। সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে এ সড়ক দুটি থেকে অনেকটাই উচ্চতায়, সেই সঙ্গে করা হয়নি কোনো সংযোগ সড়ক। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নামেশিপাড়া সংলগ্ন নিদ্রা খালের ওপর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা হয়। ৮৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটির কাজ পেয়েছেন মেসার্স সারা প্রিন্স এন্টারপ্রাইজ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এক বছর সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন সেতুটি খালের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘এটা সেতু না যেন পাহাড়, সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। অথচ সেতুর ওপর থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলেই ভয় পাই। এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়ার সময় বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনায় পড়ে। বৃষ্টির সময় সিঁড়িগুলো খুবই পিচ্ছিল অবস্থায় থাকে। পা ফসকে পড়ে গেলেই ২০ হাত নিচে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। খালের মধ্যে সেতু নির্মাণের পর সংযোগ সড়ক না করে ফেলে রাখা সাধারণ মানুষের সঙ্গে তামাশার শামিল। সেতুর দুই প্রান্তের সংযোগ সড়ক দ্রুত নির্মাণের দাবি জানান তারা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সারা প্রিন্স এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজটি করেন তালতলী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মারুফ রায়হান তপু। তিনি বলেন, ‘সেতুর কাজ শেষ হয়ে গেছে, এখন সংযোগ সড়কের কাজ বাকি আছে। সেটাও কিছুদিনের মধ্যে হয়ে যাবে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মহিবুল ইসলাম বলেন, সেতুর কাজ শেষ হয়েছে, তবে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়নি। এ কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিল দেয়া হয়নি। সেতুর কাজ সম্পন্ন করলে বিল দেয়া হবে।’