ভিসানীতি নিয়ে র্যাব চিন্তিত নয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেছেন, ভিসানীতি নিয়ে ভাবছে না র্যাব, জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ভিসানীতি নিয়ে প্রশ্নে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘যে ভিসানীতির কথা বলছে, সেটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের ৭ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যেটা এখনো চলমান। তাই এই বিষয় (ভিসানীতি) নতুন না। র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গিমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আগের মতোই কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিসানীতি সুনির্দিষ্ট একটি দেশের। তারা তাদের বিবেচনায় কাজ করছে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি। এখনো চাঞ্চল্যকর কোনো ঘটনা ঘটলে কাজ করছি। এমন কি জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার মতো একটি জঙ্গি সংগঠনের মূল থেকে উপড়ে ফেলার কাজ র্যাব করেছে। এটা (ভিসানীতি) নিয়ে আমাদের তেমন চিন্তা নেই। আমরা আমাদের কাজ করছি।’
এ সময় ‘নির্বাচন কমিশন আশঙ্কা করছে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্ত্রের ঝনঝনানি বাড়তে পারে’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমান্ডার খন্দকার মঈন বলেন, ‘র্যাবের ম্যান্ডেট হলো অস্ত্র, জঙ্গি, মাদক ও সন্ত্রাসী দমন। এটা শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কাজ করছি তা না। আমরা যখনই অবৈধ অস্ত্র বহন, ব্যবহারের তথ্য পাই সেটা দেশের যে প্রান্তেই হোক আমরা কাজ করি। গত সপ্তাহে যশোর থেকে ছয়টা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা নির্বাচন না, যেকোনো সময় হোক জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি।’
তিনি বলেন, ‘তবে কিছু ব্যক্তি বা মহল মনে করে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের জনসর্থনের পাশাপাশি পেশি শক্তির প্রয়োজন রয়েছে। তাদের কিন্তু এই ধরনের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করা বা সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে অস্ত্রের ব্যবহারের চেষ্টা থাকতে পারে। তবে এ বিষয়ে আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে।’
নির্বাচনের আগে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের জামিনের তথ্যের বিষয়ে এক প্রশ্নে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা জামিনে বের হওয়ার তথ্য সরাসরি আমরা পাই না। পাওয়ারও কথা না। সন্ত্রাসীরা কারাগার জামিনে বের হচ্ছে আদালতে কোর্ট দারোগা থাকে, অনেক ক্ষেত্রে কারাগার থেকে কারা কর্তৃপক্ষ বা কারা পুলিশের কাছ থেকে পুলিশ সদর দপ্তর পেয়ে থাকে। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দাদের মাধ্যমে বড় মাপের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও যাদের বড় ধরনের অপরাধের ইতিহাস রয়েছে তাদের অবস্থান নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় র্যাবের জনবল অপ্রতুল। তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে আমরা কাজ করছি। যেহেতু তারা আইনানুগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জামিনে বের হয়ে আসছে। অনেক জঙ্গিও বের হয়ে আসে। এই তথ্যটা গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শেয়ার করা উচিত। তখন সবাই সমন্বিতভাবে মনে করে এটার বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থার নেয়া প্রয়োজন আছে, তখন ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। তবে আমরা নজরদারিতে রাখার চেষ্টা করি। জামিনে বের হয়ে এসে আবারও অপরাধ করছে কি-না তা আমরা মনিটর করছি।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আশুলিয়ায় দম্পতিসসহ তিনজন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার সাগর কিন্তু চিহ্নিত সন্ত্রাসী না, শীর্ষ সন্ত্রাসীও না। তবে সাগর আমাদের জানিয়েছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। আমরা এমন কোনো তথ্য পেলেই তাদের আইনের আওতায় আনা হয়। পাশাপাশি এই ব্যাপারটা নিয়ে আমরা সতর্ক আছি।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা