বিশ্বকাপ পাকিস্তান দলের অন্যতম সেরা অস্ত্র হারিস রউফ। বিশ্বকাপে নিজেকে মেলে ধরতে মুখিয়ে আছেন তিনি। ২০২০ সালে পাকিস্তান দলে অভিষেকের পর থেকেই এই পেসার নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নতুন বল ও পুরোনো বলে আস্থা অর্জন করেন তিনি। পাকিস্তানের পেস আক্রমণের গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্যের অতীত জীবনটা ছিল অনেক সংগ্রামের। নাশতা বিক্রির কাজও করতে হয়েছিল তাকে। একসময় টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। তার বদলে যাওয়ার জীবনের গল্প নিজেই বলেছেন রউফ।
১৯৯৩ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে জন্ম তার। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। তখন টেপ টেনিস বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ মেটানোর জন্য ক্রিকেট খেলছেন এই পাকিস্তানি পেসার। রউফ জানান, রোববারে নাশতাও বিক্রি করতেন।
তার মায়ের স্বপ্ন ছিল নিজেদের একটা বাড়ি হবে। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, তখন তার বাবা ফি দেয়ার মতো আয় করতেন না। এ জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলে পাকিস্তানে ক্রিকেটাররা দুই থেকে আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত আয় করতে পারেন। খেলে আয় করে টাকা মায়ের হাতে দিতেন রউফ।
২০১৭ সালে তিনি লাহোর কালান্দার্সের ট্রায়ালে অংশ নেন এবং কোচ আকিব জাভেদের চোখে পড়েন। আকিব জাভেদই মূলত রউফকে বদলে দিয়েছেন।
রউফ জানান, ট্রায়ালে ঘণ্টায় ৮৩ থেকে ৮৪ মাইল গতিতে বল করছিলেন। তার প্রথম বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ৮৮ মাইল। তাহির মুঘল (কোচ) ভেবেছিলেন স্পিড মেশিনে কোনো সমস্যা আছে। তিনি আকিবকে ডাকেন। এরপর দ্বিতীয় বলটি ৯০ মাইল গতিতে করেন তিনি। তৃতীয় বলটি ছিল ৯২ মাইল গতির। এই ট্রায়ালের পরই জীবন বদলে যায় রউফের।
এরপর তিনি যান অস্ট্রেলিয়ায়। ২০১৮ সালে আবুধাবি টি-টোয়েন্টি ট্রফির জন্য লাহোর কালান্দার্স দলে ডাক পান রউফ। ঘরোয়া ক্রিকেটে আগমনের পর দারুণ পারফরম্যান্সের কারণে জাতীয় দলে আসার জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি তাকে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয় তার।
এবার ভারতের মাটিতে হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপেও তার দিকে নজর থাকবে সবার। নাসিম শাহর চোটের কারণে ২৮ ওয়ানডেতে ৫৩ উইকেট শিকার করা রউফ পাকিস্তান দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছেন।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা