আপডেট : ৫ অক্টোবর, ২০২৩ ১৭:১৬
ইরানের ১১ লাখ বুলেট কিয়েভে পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানের ১১ লাখ বুলেট কিয়েভে পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহীত ছবি

ইরানের কাছ থেকে জব্দ করা প্রায় ১১ লাখ বুলেট ইউক্রেনে পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেনাবাহিনী গত বুধবার এ কথা জানায়। গত বছরের ডিসেম্বরে ইয়েমেনমুখী একটি জাহাজ থেকে ইরানের এই বিপুল পরিমাণ বুলেট জব্দ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

বিবিসি জানায়, মধ্যপ্রাচ্যে অভিযানের তদারককারী মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জানায়, গত সোমবার বুলেটগুলো ইউক্রেনে পাঠানো হয়। ৭.৬২ মিমি ক্যালিভারের এসব বুলেট সোভিয়েত আমলের রাইফেল ও হালকা মেশিনগানে ব্যবহার করা হয়।

এমন সময় জব্দ করা ইরানি অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানো হলো, যখন পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভকে অব্যাহতভাবে অস্ত্র সহায়তা করতে গিয়ে নিজেদের মজুত ফুরিয়ে যাওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে । তারা কিয়েভকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন গত মঙ্গলবার বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে অনুমোদিত সহায়তাসহ ইউক্রেনের সামরিক চাহিদাগুলো কিছুটা বেশি সময় ধরে মিটিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে সহায়তা বজায় রাখার জন্য কংগ্রেসের পদক্ষেপ প্রয়োজন।
মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড বুধবার বলেছেন, ‘এই গোলাবারুদ হস্তান্তর একটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জনগণের লড়াইয়ে সহযোগিতা করবে। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের জন্য আমরা আইনি কার্যক্রম চালিয়ে যাব।’

২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বর ১১ লাখ ৭.৬২ মিলিমিটারের বুলেট জব্দ করেছে মার্কিন নৌবাহিনী। মারওয়ান-১ নামের একটি জাহাজ থেকে এসব গোলাবারুদ জব্দ করে তারা। ইরানের পাঠানো এসব গোলা ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। জাতিসংঘের আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘিত হওয়ায় এসব জব্দ করা হয়। মার্কিন আইন মন্ত্রণালয় ইরানের কাছ থেকে জব্দ করা ৯ হাজারের বেশি রাইফেল, ২৮৪টি মেশিনগান, ১৯৪টি রকেট লঞ্চার, ৭০টির বেশি ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রেরও মালিকানা পেতে চেষ্টা করছে।

যুক্তরাজ্যের সতর্কবার্তা

যুক্তরাজ্য সরকার গত বুধবার সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেনের বিভিন্ন বন্দরের কাছে সামুদ্রিক মাইন পুঁতে রেখে কৃষ্ণসাগরে চলাচল করা বেসামরিক জাহাজ লক্ষ্য করে এসবের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কিয়েভের ঘাড়ে দোষ চাপাতে পারে রাশিয়া।গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে ব্রিটিশ সরকার জানায়, ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত করতে তাদের ‘মানবিক করিডোর’ দিয়ে চলাচল করা পণ্যবাহী বিভিন্ন জাহাজ রাশিয়ার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি বলেন, ‘কৃষ্ণসাগরে চলাচল করা বেসামরিক জাহাজে হামলা চালিয়ে ক্ষতিসাধনে রাশিয়ার লক্ষ্য বেসামরিক জীবন এবং বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের চাহিদার প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অবহেলা প্রদর্শনের শামিল।’

তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্ব এবং আমরা দেখছি এই ধরনের হামলার ক্ষেত্রে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর দোষ চাপানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’

গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে ক্লিভারলির দপ্তর বলেছে, ‘যুক্তরাজ্য রাশিয়ার এই কৌশল ও চেষ্টাকে বাধা দিতে চায়।’

রাশিয়া গত জুলাই মাসে কৃষ্ণ সাগর শস্য সরবরাহ চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ওই অঞ্চলে তাদের সামরিক তৎপরতা জোরদার করে।

যুক্তরাজ্য বলেছে, এই অঞ্চলে রুশ হামলায় বিভিন্ন বন্দরের ১৩০টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রায় ৩ লাখ টন শস্য ধ্বংস হয়েছে, যা এক বছরের জন্য ১০ লাখেরও বেশি লোককে খাওয়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল।