আপডেট : ১২ অক্টোবর, ২০২৩ ১৩:৩০
সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না সেতুটি
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না সেতুটি

সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় বাঁশের সিঁড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ। সম্প্রতি কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায়।

কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কোমরভাঙ্গী (ভিটাপাড়া) গ্রামে ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে জামাইপাড়া বেড়িবাঁধে যাওয়ার রাস্তার ওপর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি। এ কারণে সেতুতে বাঁশের সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হয়। এতে শিক্ষার্থীসহ ভোগান্তিতে পড়েছে কোমরভাঙ্গী, জামাইপাড়া, পুরাতনপাড়া, শিবেরডাঙ্গী, পাখিউড়া, কোমরভাঙ্গী উত্তরপাড়া, কমরভাঙ্গাসহ ১০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ। চলাচল না করতে পারায় কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, এক বছর হয়ে গেছে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে অথচ সংযোগ সড়ক নেই। বাঁশের সিঁড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠতে হয়। এ সেতু নির্মাণের পর জনগণের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ব্রিজ পার হওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীসহ মানুষ প্রতিদিন সিঁড়ি বেয়ে সেতু পারাপার হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর দুই পাশে মাটির কাঁচা রাস্তা। এ সেতু দিয়েই প্রতিদিন স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ যাতায়াত করে। অথচ বাইসাইকেল ও ভ্যানগাড়ি নিয়ে ওঠা যায় না সেতুটিতে। সেতুটি চলাচলের রাস্তা থেকে অনেকটাই উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে, সেই সঙ্গে করা হয়নি কোনো সংযোগ সড়ক।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কোমরভাঙ্গী থেকে জামাইপাড়া বেড়িবাঁধে যাওয়ার রাস্তার ওপর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা হয়। ৭০ লাখ ৭২ হাজার ২২৪ টাকা ব্যয়ে সেতুটির কাজ পেয়েছে কুড়িগ্রামের মেসার্স শিতল কনস্ট্রাকশন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ১ বছর সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন সেতুটি রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এটা সেতু নয়, যেন পাহাড়ি সিঁড়ি। অথচ সেতুর ওপর থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলে অনেকেই ভয় পায়। এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়ার সময় বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনায় পড়ে। বৃষ্টির সময় সিঁড়িগুলো খুবই পিচ্ছিল অবস্থায় থাকে। পা ফসকে পড়ে গেলেই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুর দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানান তারা।

কুড়িগ্রাম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শিতল কনস্ট্রাকশন প্রোপাইটর মো. মামুন মিয়ার লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজটি করেন রাজিবপুর উপজেলার শুকুর আলী। তিনি বলেন, সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। এখন সংযোগ সড়কের কাজ বাকি আছে। সেটাও কিছুদিনের মধ্যে হয়ে যাবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নুর আলম সরকার বলেন, ব্রিজের ঢালাইয়ের সময় আমি গিয়েছিলাম; তারপর আমি যাই নাই। তবে দু-একদিনের মধ্যে যাব।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামসুদ্দিন বলেন, আমি রৌমারী উপজেলায় নতুন জয়েন করেছি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।