আপডেট : ১২ অক্টোবর, ২০২৩ ২২:৫১
কঠিন ম্যাচে সামনের দিকে চোখ সাকিবের
ক্রীড়া প্রতিবেদক

কঠিন ম্যাচে সামনের দিকে চোখ সাকিবের

সাকিব আল হাসান। ফাইল ছবি

বিশ্বকাপে শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কঠিন ম্যাচ খেলতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। গত ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে হতাশ হলেও তা পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চান সাকিব আল হাসানরা। কিউইদের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় থাকবেন তারা। জয়ের ধারায় ফেরার লক্ষ্য নিয়ে আজ চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর নিজ দলকে ভেঙে না পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তার মতে, বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে যেকোনো কিছুই হতে পারে। সাকিব বলেছেন, ‘এটি একটি বড় টুর্নামেন্ট। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং সামনে আমাদের কিছু কঠিন ম্যাচ আসছে। আমাদের ভেঙে পড়লে চলবে না। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং আমরা যেসব ইতিবাচক কাজ করছি, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে।’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পরিবর্তে স্পিনার মেহেদী হাসানকে একাদশে নিয়েছিল বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করলেও ব্যয়বহুল ছিলেন মেহেদী। চেন্নাইয়ের উইকেট যদি স্পিনসহায়ক হয়, তাহলে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকেও খেলাতে পারে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও টিম ম্যানেজমেন্ট ওপেনার তানজিদকে আরও একবার সুযোগ দেয়ার পক্ষে বলে মনে হচ্ছে।

আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হারে টাইগাররা। অন্যদিকে, টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছে বর্তমান রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮২ বল বাকি রেখে ২৮৩ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ৯ উইকেটের জয় পায় কিউইরা। পরের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ৯৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপ আসরে নিজেদের দুই ম্যাচে নতুন বলে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি বাংলাদেশের পেসাররা। বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে আফগানিস্তানকে ১৫৬ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশের স্পিনাররা। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের পেসাররা ছিলেন ব্যয়বহুল। একমাত্র অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছাড়া আর কোনো স্পিনারই ইংলিশদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি।

ব্যাটিংয়ে পুরোপুরি ব্যর্থই ছিল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৭ রানে ২ উইকেট হারালেও সমস্যায় ফেলেনি টাইগারদের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিংসহায়ক উইকেটে বাংলাদেশি ব্যাটাররা ফর্মে ফিরবেন ধারণা করা হলেও সেটি হয়নি। প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ৩৬৪ করে ইংল্যান্ড। জবাবে ৪৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। আর সেখানেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। তবে ফর্মে ফিরেছেন লিটন দাস। ৬৬ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা বাংলাদেশের জন্য একমাত্র সান্ত্বনার বিষয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তানজিদ হাসান তামিম নতুন হওয়ায় সংগত কারণেই প্রত্যাশাটা লিটনের ওপরই বেশি। নিজের সেরাটা দিয়ে দলকে ভালো শুরু এনে দেবেন লিটন এমনটাই আশা করছে বাংলাদেশ শিবির। বাংলাদেশের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেই শুরু করবে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের ঠিক আগে বাংলাদেশের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। যা ছিল ২০০৮ সালের পর বাংলাদেশের মাটিতে কিউইদের প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়। ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ৪১ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের জয় ৩০টিতে, বাংলাদেশের ১০টিতে। বাকি একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।

সাম্প্রতিক রেকর্ড এবং বর্তমান ফর্মের কারণে বিশ্বকাপের ম্যাচে স্পষ্টভাবেই ফেভারিট নিউজিল্যান্ড। ১৯৯৯-এ যাত্রা শুরুর পর ২০১১ আসর ছাড়া বিশ্বকাপের সব আসরেই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দেখা হয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্বকাপে পাঁচবারের দেখায় সবগুলোতেই হেরেছে টাইগাররা।

২০১৯ সালের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর ভালো সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে রানআউটের সুযোগ হাতছাড়া করেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ২ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। জীবন পেয়ে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন উইলিয়ামসন। ইনজুরির কারণে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি। শুক্রবার ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেবেন উইলিয়ামসন। যদিও ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ফেভারিট। তারপরও চেন্নাইয়ে গরম এবং স্পিনসহায়ক উইকেট থাকায় ম্যাচ জয়ে কিছুটা আত্মবিশ্বাসী থাকবে বাংলাদেশ।