গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চলমান অত্যধিক মাত্রার শক্তি প্রয়োগ ও সাধারণ জনগণের হতাহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে এই ইস্যুতে ওআইসির ডাকা বৈঠকে যোগ দিচ্ছে ঢাকা। আগামী ১৮ অক্টোবর সৌদি আরবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
রোববার ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ওআইসি মিটিংয়ে যাচ্ছি। সেটাতে আমরা যোগ দেব বলে উনি (রাষ্ট্রদূত) আলোচনা করতে আসেন। সৌদি প্রিন্স আমাদের দাওয়াত দিয়েছেন ওআইসির পক্ষ থেকে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত কিছু আপডেট দিয়েছেন। সম্প্রতি কিছু মিডিয়ায় হামাস সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শিশুদের গলা কাটার অভিযোগও এসেছে। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। এগুলোর কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারেনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ওআইসির ডাকা বৈঠকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত জানিয়ে তিনি বলেন, গাজা অবরোধ সফল হবে কি না সন্দেহ। কিছু লোকের জন্য সমষ্টিগত শাস্তি দেয়া, গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। পানি, ওষুধ, খাবার বন্ধ করা- এগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন।
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না বিশ্বে আর কোনো শরণার্থী বাড়ুক।
এক ফেসবুক পোস্টে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গাজায় মানবিক বিপর্যয় রোধ এবং অবিলম্বে মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এই অঞ্চলে একটি ন্যায্য এবং স্থায়ী সমাধান এবং স্থায়ী শান্তির জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) রেজল্যুশনের ভিত্তিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের দিকে কাজ করার আহ্বানও জানায় ঢাকা।
প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি। ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের বোমা হামলায় ৭২৪ শিশুসহ অন্তত ২ হাজার ৩২৯ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আনুমানিক ৯ হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রায় ৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এরই প্রেক্ষাপটে শনিবার এক বিবৃতিতে ওআইসির সদস্যভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিদের জেদ্দায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে ওআইসি। বিবৃতিতে বলা হয়, সৌদি আরবের আমন্ত্রণে ওআইসি গাজা ও এর আশপাশে বিদ্যমান সামরিক পরিস্থিতি, বেসামরিক নাগরিকদের জীবনের জন্য বিপজ্জনক ক্রমশ গুরুতর পরিস্থিতিতে জরুরি সভার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি অঞ্চলটির সার্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়েও উন্মুক্ত-আলোচনার জন্য কার্যনির্বাহী পর্যায়ে বৈঠকটি হবে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা