আপডেট : ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ ১৬:১০
আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই জলাতঙ্কের টিকা, ভোগান্তি 
বরগুনা প্রতিনিধি

আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই জলাতঙ্কের টিকা, ভোগান্তি 

ফাইল ছবি

বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধকের কোনো ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়েই উপজেলার সাধারণ মানুষ ছুটে যান জেলা সদর হাসপাতালে। এতে বাড়তি খরচের পাশাপাশি সময়ও নষ্ট হচ্ছে। আবার কেউবা এই অতিরিক্ত খরচ বাঁচাতে কুকুর-বিড়ালে কামড়ালে কবিরাজের শরণাপন্ন হচ্ছেন। এতে মৃত্যুঝুঁকি অনেকটাই বাড়ছে।

জানা গেছে, উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত হলেও সেখানে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক না থাকায় চিকিৎসাসেবা নিতে পাচ্ছেন না রোগীরা। উপজেলা পর্যায়ে এই ভ্যাকসিনের সরবরাহ না থাকায় অতিরিক্ত দাম দিয়ে বাহিরের ওষুধের দোকান থেকে কিনতে হচ্ছে রোগীদের। বাধ্য হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রোগীদের পায়রা বুড়িশ্বর নদী পাড়ি দিয়ে চিকিৎসা নিতে যেতে হয় বরগুনা সদর হাসপাতালে। এতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা খরচ হয়। অনেক ক্ষেত্রে গরিব ও অসহায় পরিবারের রোগীরা টাকার অভাবে কুকুর-বিড়ালে কামড় দিলেও ভাকসিন দিতে পারছেন না। কেউ কেউ আবার না বুঝেই শরণাপন্ন হচ্ছেন কবিরাজের। এতে জলাতঙ্ক রোগে মৃত্যুঝুঁকির শঙ্কা বাড়ছে।

পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকার বিড়ালে কামড়ানো রোগী লাভলী আক্তার বলেন, ‘জেলা সদরে যাওয়া একদিকে ঝামেলা অন্যদিকে বেশি খরচ তাই কিনে টিকা দিয়েছি। যদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দেয়া হতো, তাহলে আমার ২ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হতো না।’

উপজেলার আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের বিড়ালের কামড়ানো রোগী হাসিনা আক্তার বলেন, ‘বরগুনা সদর হাসপাতাল থেকে এই প্রতিষেধক নিয়েছি। যদি আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই প্রতিষেধক পেতাম, তাহলে আমার বাড়তি খরচ হতো না। সময়ও বাঁচত।’

হলদিয়া ইউনিয়নের কবির নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘মাসখানেক আগে আমার ছোট ছেলেকে কুকুরে কামড়িয়েছিল। বরগুনা সদর হাসপাতালে যাওয়ার টাকা ছিল না। তাই এলাকার এক কবিরাজের কাছে গিয়ে মিঠা পড়া ও ঝাড়ফুঁক দিয়েছে। আমতলী হাসপাতালে যদি টিকা থাকত, তাহলে ওখানে গিয়ে টিকা দিতাম।’

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনায়েম সাদ বলেন, ‘জেলা হাসপাতালে কুকুরে কামড়ের ভ্যাকসিন থাকে। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে তা সরবরাহ থাকে না। কয়েক মাস পর ৪০-৫০টি টিকা পেয়ে থাকি। যেগুলো আসে, তা কয়েক দিনে শেষ হয়ে যায়। যার কারণে আমরা রোগীদের যথাযথভাবে টিকা দিতে পারি না। এমন রোগী এলে আমরা জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।

বরগুনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. ফজলুল হক বলেন, ‘জেলার জন্য যে পরিমাণ টিকার প্রয়োজন, আমরা সেই পরিমাণ টিকা পাই না। যখন টিকাগুলো আসে, তখন সব উপজেলায় যতটা সম্ভব টিকা পাঠিয়ে দিয়ে থাকি। বাকিটা বরগুনার সদর হাসপাতালে রিজার্ভ রাখা হয়। পরবর্তী সময় টিকা এলে আমরা সব উপজেলায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করব।’