মোখলেসুর রহমান
ওয়ারেন্ট তামিল নিয়ে সমস্যাটি যেমন নতুন নয়, তেমনি থানা থেকে ওয়ারেন্ট গায়েব হয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রথম ঘটছে, এমন না। এই সমস্যাটি সব সময়ই ছিল। সে কারণেই যে পরিমাণ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় সে সংখ্যক কখনোই নিষ্পত্তি হয় না। তারপরও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিষ্পত্তিতে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যায়। যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়।
তবে ওয়ারেন্ট মিসিংয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে শুধু একপক্ষের বিষয়ে চিন্তা করার সুযোগ নেই। দুই দিক থেকেই দেখা উচিত। কারণ ওয়ারেন্ট জারি করেন আদালত। সেখানে রেজিস্টারে তালিকাভুক্ত করে ওয়ারেন্ট থানা পুলিশকে পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে সেই ওয়ারেন্ট আসে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ারেন্ট তামিল করে আদালতকে অবহিত করেন।
এখন অনেক সময় দেখা যায়, জারি হওয়া ওয়ারেন্ট আদালত থেকে থানায় এসে কখনো পৌঁছায় না। আদালতে রেজিস্টারে থাকলেও বাস্তবে তা পাওয়া যায় না। মিসিং ওয়ারেন্ট নিয়ে কাজ করতে গেলে দুই দিকেরই এমন বহু ঘটনা পাওয়া যায়।
তবে সেটা যেদিক থেকেই ঘটুক না কেন, এর পেছনে থাকে অপরাধী চক্রের মোটা অঙ্কের আর্থিক প্রলোভন। যেটাতে পা দেয় সংশ্লিষ্টরা। আমরা এটাও জানি, অন্য আরও কয়েকটি বিভাগের মতো পুলিশেও কিছু কিছু আর্থিক অনৈতিক বিষয় থাকে। সেসব কারণে এই বিষয়গুলোর সম্মুখীন হতে হয়।
সমাধান হিসেবে আমার যেটা মনে হয়, ওয়ারেন্ট জারি হওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খোঁজ রাখতে হবে। অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করতে হবে। পুলিশ অবশ্য সেটা করেও। পাশাপাশি আদালতের দিকটাও দেখতে হবে। আদালতে জারি হওয়া আদেশ পৌঁছাতে কেন দেরি হচ্ছে সেটা জানার চেষ্টা করতে হবে।
তবে পুলিশের মতো আদালতের স্টাফপর্যায়ে কর্মচারীদেরও মিসিং ওয়ারেন্টের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন। কারণ মনে রাখতে হবে, সুবিচার নিশ্চিত করতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিষ্পত্তি করা জরুরি।
লেখক: পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা