চলমান হরতাল-অবরোধের শুরুর দিকে ককটেলের ব্যবহার কম থাকলেও গত দুই সপ্তাহে তা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গত ৩০ নভেম্বর রিটার্নিং অফিসার কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের হোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার বিষয়ে জানানোর সময় তিনি এ কথা বলেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আশিকুর রহমান পান্না, পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন হোসেন রনি ও বিল্লাল হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাতে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ও ঢাকার আশেপাশের এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গত ৩০ নভেম্বর বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার নির্বাচনী আসনগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের পাশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেদিন ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এদিন দুপুর ৩টার একটু পর রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসের পাশে ২-৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঘটনার পর ডিএমপির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এনবিআর অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহাতীতভাবে সঠিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে আমরা কাজ করি। এরই ধারাবাহিকতায় আশিকুর রহমান পান্না ও পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতার ভয়ংকর তথ্য দিয়েছে। রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় ছাড়াও এ দুইজন আরও ৮টি ঘটনা ঘটিয়েছেন। এছাড়া, রমনার বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন হোসেন রনি ও বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা ১২টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ী।
ডিএমপি কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার চারজন মোট ২১টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু মামলা রয়েছে। আরও কোনো ঘটনায় জড়িত কি না এবং তাদের পেছনে কারা রয়েছে তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করবো।
ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হরতাল-অবরোধে যে নাশকতা কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা হচ্ছে, এর বড় একটি অংশ আমরা এক্সিকিউট (সংঘঠিত) করতে দেইনি। তারপরেও কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে বিভিন্ন ঘটনার সময় আমরা হাতেনাতে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করেছি। কম হলেও আমরা কোয়ালিটি অ্যারেস্ট করতে পেরেছি। তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করতে না পারলেও তদন্তে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় যাদের নাম আসছে তাদের গ্রেফতার করছি। যাতে কোন নিরীহ ব্যক্তি ভুলের শিকার না হয়, সেজন্য নিশ্চিত না হয়ে কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। আমরা যেকোনোভাবে মহানগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, হরতাল-অবরোধের প্রথমদিকে ককটেলের ব্যবহার কম ছিল। কিন্তু গত ২ সপ্তাহ ধরে ককটেলের ব্যবহার বাড়ছিল। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ককটেলের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা