যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে গতকাল বুধবার বিতর্ক আর হট্টগোলে পূর্ণ একটি উত্তেজনাময় দিন পার করার পর প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস নতুন করে চাপের মুখে পড়েছেন।
আর্থিক নীতিমালা নিয়ে বার বার সরকারের অবস্থান বদল নিয়ে ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতারা কখনো ক্ষুব্ধ হচ্ছেন, আবার কখনো বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। এখন প্রধানমন্ত্রীর ওপর অনাস্থা প্রস্তাব আনতে ভোটাভুটি আয়োজনের দরকার আছে কি না, সেটা নিয়ে তারা ভাবতে শুরু করেছেন।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি আর লাগামহীন মূল্যস্ফীতি সামলানোর উপযোগী আর্থিক নীতি নির্ধারণ করতে গিয়ে ট্রাসের সরকার হিমশিম খাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের দেড় মাসের মধ্যে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছেন। মিনি বাজেট নিয়ে সমালোচনার মুখে অর্থমন্ত্রী পাল্টাতে বাধ্য হয়েছেন। এবার তাকে নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দিতে হলো। কারণ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সুয়েলা ব্রেভারম্যান সরে দাঁড়িয়েছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি কড়া ভাষায় প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের সমালোচনা করেছেন। তার জায়গায় নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন গ্র্যান্ট শ্যাপস। তিনি বরিস জনসনের মন্ত্রিসভায় পরিবহন দপ্তরের দায়িত্ব সামলেছেন।
অবশ্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ট্রাসের ওপর মন্ত্রিসভা এখনো আস্থা রেখেছে। পরিবহনমন্ত্রী অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ানের কথায় সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যে মিলেছে। সরকারি দলের চিফ হুইপ ও ডেপুটি চিফ হুইপ এখনো তাদের নিজ নিজ পদে বহাল আছেন, যদিও আগে শোনা গিয়েছিল তারা দায়িত্বে বহাল নেই।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, কনজারভেটিভ পার্টির যে আইনপ্রণেতারা দলীয় ঐক্য ও শৃঙ্খলার সামগ্রিক ভাঙনের মতো পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে ভোট দেননি অথবা বিরত থেকেছেন-তাদের বিরুদ্ধে আনুপাতিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ইতিমধ্যে সাত জন কনজারভেটিভ আইনপ্রণেতা প্রকাশ্যে বলেছেন, ট্রাসের পদত্যাগের সময় এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব অব্যাহত রাখা ট্রাসের জন্য খুব কঠিন হবে। কারণ, লিজ ট্রাস এখন নিজ দলের বাইরে থেকে নয়, বরং ভেতর থেকেই বেশি বিরোধিতার মুখে পড়ছেন।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা