তালেবানের কড়াকড়িতে আফগানিস্তানে আফিম উৎপাদন যখন কমছে, তখন বিপরীত চিত্র জান্তাশাসিত মিয়ানমারে। সংঘাত-সহিংসতার মধ্যে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে হেরোইন তৈরির মূল উপকরণ আফিমের উৎপাদন। এরই মধ্যে আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে বিশ্বের বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠেছে মিয়ানমার। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দপ্তরের (ইউএনওডিসি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউএনওডিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে মিয়ানমারে আনুমানিক ১ হাজার ৮০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদন হয়েছে। বিপরীতে আফগানিস্তানে এ বছর আফিম উৎপাদন মাত্র ৩৩০ টনে দাঁড়িয়েছে, যা আগের তুলনায় প্রায় ৯৫ শতাংশ কম। গত বছরের এপ্রিলে তালেবান পপি চাষে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকেই দেশটিতে আফিম চাষ কমছে।
মিয়ানমার, লাওস এবং থাইল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্ত অঞ্চলটি ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ নামে পরিচিত। এটি অবৈধ মাদক উৎপাদন ও পাচারের জন্য কুখ্যাত; বিশেষ করে, আফিম ও মেটামফেটামাইনের জন্য।
ইউএনওডিসি জানিয়েছে, আফিম চাষ থেকে মিয়ানমার বছরে ১০০ কোটি থেকে ২৪০ কোটি ডলার আয় করছে, যা দেশটির ২০২২ সালের জিডিপির ১ দশমিক ৭ থেকে ৪ দশমিক ১ শতাংশের সমতুল্য। গত বছর মিয়ানমারে আনুমানিক ৭৯০ মেট্রিক টন আফিম চাষ হয়েছিল।
আফিম চাষ বাড়ার কারণ
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক সংঘাত-সহিংসতা। এতে মারাত্মক অনিশ্চয়তায় ভুগছে দেশটির বৈধ অর্থনীতি। এ অবস্থায় অনেক কৃষক অবৈধ পপি চাষে ঝুঁকছেন।
জাতিসংঘ বলছে, বাজার এবং রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর অপর্যাপ্ত সুবিধার পাশাপাশি ব্যাপক মূল্যস্ফীতি ২০২২ সালের শেষের দিকে মিয়ানমারের কৃষকদের আরও পপি বেশি চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
ইউএনওডিসির হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন ছিল বিগত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা