আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১১:৩৭
যে কারণে আবারও ক্ষমতায় ফিরতে পারেন ট্রাম্প
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যে কারণে আবারও ক্ষমতায় ফিরতে পারেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের কাছে হেরে গিয়েছিলেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমালোচকরা ভেবেছিলেন ট্রাম্প আর কোনো দিন রাজনীতিতে ফিরবেন না, এই বিতর্কিত নেতা গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন। এরপর ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের কফিনে একের পর এক পেরেক হিসেবে আসে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা, যৌন কেলেঙ্কারি, গোপন নথি, ভোট জালিয়াতিসহ কয়েকটি বড় বড় অভিযোগ। কিন্তু রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই তা-ই যেন প্রমাণ করছেন ৭৭ বছর বয়সি ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের হয়ে ফের লড়ছেন ট্রাম্প, এমনকি সাম্প্রতিক জরিপগুলোর প্রায় সবগুলোতেই এগিয়ে আছেন তিনি।

এবার জাতীয়পর্যায়ের এক জরিপে দেখা গেল, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার মনোনয়ন দৌড়ে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। ৫০ শতাংশ জনমত রয়েছে ট্রাম্পের পক্ষে। এই জরিপের পর বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, আবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ফিরতে পারেন ট্রাম্প। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন বছর আগে, কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক ট্রাম্পের পরাজয় ও নানামুখী অপমানের ফলে চিরতরে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার আভাস দিয়েছিলেন; কিন্তু তার অসাধারণ প্রত্যাবর্তন সবাইকে সত্যিই স্তব্ধ করে দিয়েছে। পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র ১১ মাস বাকি। এর আগে রয়টার্স আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের মনোনয়ন ও তার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে জয়ের চারটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছে।

জো বাইডেন সরকার বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের চেয়ে বর্তমানে অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক ভালো আছে। যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে বেকারত্বের হার ও মুদ্রাস্ফীতিতে দেশটির উন্নয়ন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা ছাড়ার সময় দেশে বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ থাকলেও তা ঐতিহাসিক সর্বনিম্ন ৩ দশমিক ৯-এ নেমে এসেছে। এ ছাড়া ২০২২ সালের জুনে দেশে মুদ্রাস্ফীতির হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশে পৌঁছালেও অক্টোবর পর্যন্ত তা ৩ দশমিক ২ ছিল। কিন্তু দেশটির অনেকেই বলছে, তরুণ ভোটারসহ জনগণের বড় একটি অংশ জো বাইডেন নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। এ ক্ষেত্রে আয়ের সঙ্গে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির তুলনামূলক অস্বাভাবিক পার্থক্যে এ ক্ষেত্রে মূল বিষয় হিসেবে তুলে ধরা হয়।

বাইডেন যখন দেশটির অর্থনীতি নিয়ে কথা বলেন, তখন মার্কিনীরা অর্থনৈতিক সূচক নয় বরং তাদের সামর্থ্য-সক্ষমতার কথা ভাবেন। মতামত জরিপগুলোতে দেখা যায়, ভোটাররা বরং রিপাবলিকান আমলের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে বেশি ভালো হিসেবে দেখছেন। যদিও ট্রাম্প আগামী নির্বাচনে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন না।

অর্থনীতির বাইরেও দেশটির ভোটারদের মনে নানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেমন- শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব সংকট। ট্রাম্প শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের ক্ষেত্রে একটু বেশি সচেতন ছিল। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন ক্রমবর্ধমান বৈচিত্র্য আর সাংস্কৃতিক প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী। তা ছাড়া জরিপে দেখা যায়, ভোটাররা দেশটিতে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। একই সঙ্গে তারা মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপক প্রবেশ নিয়েও বিচলিত। ট্রাম্প এসব ভীতি দূর করতে বেশ পারদর্শী। যদিও তিনি নিজেকে মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থার বাইরে থেকে আসা একজন হিসেবে উপস্থাপন করছেন। কিন্তু ট্রাম্প খুব ভালোভাবেই সমস্যা তৈরি করে আবার সহজেই তা সমাধানও করতে পারেন।