আপডেট : ২২ অক্টোবর, ২০২২ ২১:৪১
মিয়ানমার থেকে আবারও গুলি এসে পড়ল এ-পারে
বান্দরবান, প্রতিনিধি

মিয়ানমার থেকে আবারও গুলি এসে পড়ল এ-পারে

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত। ছবি: দৈনিক বাংলা।

আবারও বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরের দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে এসে পড়েছে। কারও কারও দাবি, গুলির পাশাপাশি গোলাও পড়েছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্র বলেছে, ভারী অস্ত্রের একটি গুলি বিজিবি ক্যাম্পের খুব কাছে পড়েছে।

এর আগে ২ অক্টোবর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখায় পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে নিহত হয় এক রোহিঙ্গা কিশোর। তার দুই মাস আগে থেকেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে দেশটির বাহিনীর এই সংঘর্ষে মর্টারশেল, গোলাগুলিসহ নানা ভারী অস্ত্রের আওয়াজে এ-পারে বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু ও বাইশপারী এলাকার মানুষ দিন কাটাচ্ছে আতঙ্কে। গোলার আওয়াজ উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত এলাকায়ও শোনা যায়।

শুধু তা-ই নয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া মর্টারশেল বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে পড়েছে। দেশটির সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার বেশ কয়েকবার আকাশসীমাও লঙ্ঘন করেছে। এ নিয়ে দফায় দফায় ঢাকায় মিয়ানমারের কূটনীতিককে তলব ও প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, গত শুক্রবার রাত থেকেই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দৌছড়ি ইউনিয়নের বাহিরমাঠ এলাকার কাছে সীমান্ত পিলারের ঠিক ওপারে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপি ও সে দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশে একটি গুলি এসে পড়ে। স্থানীয় কয়েকজনের দাবি, গুলির পাশাপাশি দুটো গোলাও পড়েছে সীমান্তের এ-পারে।

নাইক্ষ্যংছড়ির দৌছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইমরান দৈনিক বাংলাকে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দৌছড়ির বাহিরমাঠে সীমান্ত পিলারের কাছাকাছি মিয়ানমার বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি বেড়ে যায়। গুলি ও মর্টার শেলের বিকট শব্দে এ-পারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ‘গোলাগুলি চলা অবস্থায় সীমান্তের এ-পারে ভারী অস্ত্রের গুলি এসে পড়েছে। সীমান্তে বসবাসরত ২০০ পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ফলে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’

স্থানীয় আব্দু শুক্কুর বলেন, ‘সকালে ধানখেতে কাজ করার সময় হঠাৎ মিয়ানমারে প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পাই। ধানখেত থেকে সরে আসার পরপরই দুটি গোলা এসে পড়ে এ দেশের ভূখণ্ডে।’

এদিকে একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলেছে, মিয়ানমার ভূখণ্ডে গোলাগুলিতে একটি ভারী অস্ত্রের গুলি লেমুছড়ি বিজিবি ক্যাম্পের প্রায় ৩০০ গজ দূরে এসে পড়েছে।

এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার উপপরিদর্শক মিঠুন সিংহ বলেন, ‘একটি মামলা তদন্ত করতে সদর ইউনিয়নের ভালুকখায়া এলাকায় গিয়েছিলাম। সেখানে গোলাগুলির বিকট আওয়াজ শোনা গেছে।’