শাকিব খান- দেশীয় চলচ্চিত্রের অনন্য এক নাম। গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশীয় চলচ্চিত্রে এককভাবে রাজত্ব করে আসছেন। বারবার খাদের কিনারা থেকে বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পকে জিইয়ে রাখছেন ঢালিউড কিং খ্যাত এই তারকা। ভক্তদের অনেকেই তাকে চেনে নাম্বার ওয়ান, বস, সুলতান, ভাইয়া, লিডার নামে। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে রাজকুমার তকমা। প্রতিবছরের মতো গত বছরও নানাভাবে আলোচনায় ছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের সবচেয়ে ব্যবসা সফল সিনেমার এই নায়ক সম্প্রতি নতুন তিনটি বিগ বাজেটের ছবি হাতে নিয়েছেন। এসব ছবির বিষয়বস্তু, চরিত্র, নতুন বছর ও চলচ্চিত্রের অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন দৈনিক বাংলার সাথে।
এইসব দিন রাত্রি…
দেশে যে পরিমাণ শীত পড়েছে, তাতে জনজীবন বিপর্যস্ত। ছিন্নমূল মানুষগুলো পরিবার নিয়ে কঠিন সময় পার করছে। এমন হাড় কাঁপানো শীতে ভালো থাকাই দায়। তারপরও সবমিলিয়ে বলতে চাই, ভালোই চলছে চলমান সময়।
নতুন বছরের প্রত্যাশা…
অনেক পরিকল্পনাই তো আছে। জানি না সবগুলো পূরণ করতে পারব কি না। তবে বেশিরভাগ পরিকল্পনাই সিনেমাকেন্দ্রিক। নতুন বছরে নতুন নতুন কাজ উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। তবে কাজের ক্ষেত্রে আরও যাচাই-বাছাই করব। সিনেমা গল্প, নিজের চরিত্র, সহশিল্পী, পরিচালক- সবকিছুই হিসাব-নিকাশ করে কাজ হাতে নেব। এ ছাড়া দেশ ও বিদেশে নতুন কিছু কাজ নিয়ে কথাবার্তা চলছে। বলা চলে, এ বছর নতুন কিছুর দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া ২০২৪ সালে কাজের পাশাপাশি সন্তানদের আলাদা করে সময় বের করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
চলচ্চিত্রের চলমান অবস্থা…
এটা তো আপনিও জানেন, আমিও জানি। পাশাপাশি দেশের দর্শকও জানেন। দেশের চলচ্চিত্রের এই মন্দাভাব পরিবর্তন করা দরকার। আমার একা বা আমার মতো গুটিকয়েক অভিনয়শিল্পী দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। ভালো ভালো গল্প তৈরির পাশাপাশি ও মেধাবী নির্মাতাদের এগিয়ে আসা দরকার। নতুন নতুন দক্ষ অভিনয়শিল্পী দরকার। এখন বিশ্বায়নের যুগ। আমাদের সিনেমা এখন বহির্বিশ্বে প্রদর্শিত হচ্ছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেশি বেশি আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ খুব জরুরি এখন।
হাতে থাকা সিনেমা…
গেত বছর প্রিয়তমা সিনেমার মুক্তির পর থেকেই নতু্ন তিন সিনেমায় আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। যেগুলোর মধ্যে দরদ ছবির কাজ প্রায় শেষ। এই ছবির নির্মাতা অনন্য মামুন বলেছিলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই দরদ মুক্তি দেওয়া হবে। প্রথমে ভারতে এবং পরে বাংলাদেশে। কিন্তু এখন শুনছি সিনেমাটির মুক্তির তারিখ পেছানো হয়েছে। কেন পেছানো হয়েছে, কবে মুক্তি পাবে- তা আমি জানি না। শুনেছি পাঁচটি ভাষায় বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাবে দরদ। আবার রাজকুমার সিনেমার মহরত হয় দুই বছর আগে আমেরিকাতে। এরপর ডিসেম্বরের ৯ তারিখে ছবির নায়িকা মার্কিন অভিনেত্রী কোর্টনি কফি ঢাকায় এলে পরের দিন আনুষ্ঠানিকভাবে শুটিং শুরু হয়। সর্বশেষ পাবনায় শুটিং শেষ করে আগামী সপ্তাহেই বাকি অংশের শুটিংয়ের জন্য আমেরিকায় যাচ্ছি। আমেরিকা থেকে ফিরেই তুফান নামের ছবিটিরও কাজ শেষ করব।
তুফান-এ নিজের চরিত্র….
মূলত এখন যেসব সিনেমায় অভিনয় করছি, সবগুলোতেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছি। তুফান ছবিতেও মূল চরিত্রে আমি থাকছি। এখানে আমাকে দেখা যাবে গ্যাংস্টারের চরিত্রে। এ ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আমার ভক্তরাও দীর্ঘদিন ধরে অনুরোধ করে আসছেন। তাদের সেই আশাও পূরণ হতে যাচ্ছে এই ছবির মারফতে। তুফান মূলত ওয়েব ফিল্ম। গত মাসেই কলকাতার এসভিএফ (শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস) ঢাকার চরকি, আলফা আই এই তিন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান মিলে ছবিটি নির্মাণের ঘোষণা দেয়। ছবিতে আমাকে নব্বই দশকের একজন গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। এ ধরনের গল্প ও চরিত্রের সিনেমা আগে কখনো করিনি। আমার মনে হয় বাংলাদেশের দর্শকও এমন গল্প দেশের সিনেমায় দেখেননি। চরিত্রটির জন্য অনেক দিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা