আপডেট : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৭:২০
মিয়ানমারে গোলাগুলি: তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
কক্সবাজার প্রতিনিধি

মিয়ানমারে গোলাগুলি: তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ব্যাপক গুলি বিনিময় ও বোমা বর্ষণ হচ্ছে। শনিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে গুলি ও বোমা বর্ষণ চলছে। বেশ কয়েকটি গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়েছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। এতে কোনাপাড়ার কয়েকটি ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অঘোষিত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা। তিনি বলেন, ‘সীমান্তে গোলাগুলি এবং অস্থিরতা অব্যাহত থাকায় ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অঘোষিত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি এরকম থমথমে থাকলে কালকেও বন্ধ থাকতে পারে।’

বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, ‘সীমান্তে আজকেও গোলাগুলি চলছে। এ কারণে মিশকাতুন্নবী মাদ্রাসায় কোনো শিক্ষার্থী না আসায় সেটি বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য স্কুলগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে শিক্ষার্থী খুবই কম। সীমান্তে ৩টি স্কুল রয়েছে সেখানে রাস্তা বন্ধ থাকায় তুমব্রু থেকে শিক্ষার্থীরা আসতে পারেনি।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যমতে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তারা হলেন, প্রবীর চন্দ্র ধর ও একজন নারী (নাম-পরিচয় জানা যায়নি)। তারা দুজনেই হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা ।

এতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী তুমব্রু, বাইশফাড়ি, ভাজাবনিয়া সীমান্ত পয়েন্টে এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এর মধ্যে হিন্দু পাড়া ও কোনার পাড়া থেকে লোকজন পালিয়ে গেছে।

এদিকে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪ জনেরও বেশি সদস্য বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের ধুমধুম বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। সীমান্ত পথে আরও ৩০ জনেরও বেশি বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে ঢোকার জন্য অবস্থান নিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের বিজিপির সদস্যরা তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সীমান্তে লাগুয়া স্কুলগুলো আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি নিরাপত্তা বাড়িয়েছে সীমান্তে। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।

মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সাথে সে দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। এ সংঘর্ষের জের ধরে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তেও উত্তেজনা চলছে।