স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনের মামলায় মোটা ও সরু চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি করে বাজার অস্থিতিশীল ও নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু মোটা ও সরু চালের ব্যবসা করে না বলে কমিশনকে জানিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
আজ বুধবার রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডের বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন কার্যালয়ে এই শুনানি হয়।
চালের মামলায় স্কয়ারের আইনজীবি শুনানিতে বলেন, কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সমস্ত কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে মোটা ও সরু চালের মূল্য বৃদ্ধি করে বাজার অস্থিতিশীল করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগটি সঠিক নয়, কারণ আমরা মোটা ও সরু চালের ব্যবসা করি না। আমরা শুধু চিনিগুঁড়া চাল বিক্রি করি। তবে চিনিগুঁড়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই। তাই আমার মক্কেলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেছি।
কমিশন এ সময় জানতে চান, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর আগে ও পরে পণ্য পরিবহনে খরচ কত বেড়েছে? পণ্য পরিবহনের ভাড়ার তালিকা দেয়া হয়নি। চিনিগুঁড়া চালের নমুনা দিয়েছেন কিন্তু কোন ধান থেকে হয় তার নমুনা দেননি কেন?
জবাবে স্কয়ারের আইনজীবি বলেন, আমাদের ৩০০ ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছে। তাদের কাছ থেকে ট্রাক ভাড়ার তালিকা নিয়ে জানাতে হবে, এতে কিছুটা সময় লাগছে। বিআর ৩৪ জাতের ধান থেকে চিনিগুঁড়া চাল হয়। আমরা ধানের নমুনা জমা দেব। কিন্তু আবারও আবেদন করছি, যে অভিযোগ করা হয়েছে তা আমাদের ক্ষেত্রে প্রজোয্য নয়। তাই অভিযোগ থেকে আমাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হোক।
আরেক মামলায় স্কয়ার টয়লেট্রিজের বিরুদ্ধে সাবান, গুঁড়া সাবান, সুগন্ধি সাবান ও বিভিন্ন ধরনের টুথপেস্ট ও শ্যাম্পুর অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। আইনজীবী শুনানিতে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী প্রতিবেদন আকারে সমস্ত কাগজপত্র ও পণ্যের তালিকা জমা দেয়া হয়েছে। তবে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে আমাদের সাবানসহ কোন পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি করা হয়নি।
এসময় কমিশন বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের ১০টির মধ্যে স্কয়ার একটি। আপনারা বাজার প্রভাবিত করতে পারেন, মন্তব্য করে কমিশন জানতে চান, দেশে সাবান ও প্রসাধনী সামগ্রীর বাজারে স্কয়ারের পণ্য কত শতাংশ। যে তালিকা চাওয়া হয়েছে তা সব নেই।
জবাবে আইনজীবী বলেন, বাজারে পণ্যের হার সম্পর্কে কোনো উপাত্ত নেই। তবে বাজারে এসব পণ্যের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র অংশ আমাদের। তাই বাজার প্রভাবিত করা আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়। আমরা সাবান ও প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রি করলেও মূল্য নিয়ে কারসাজি করি না। ১৯৫৮ সাল থেকে আমরা সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছি। এছাড়া, অভিযোগে টিস্যু পেপারের কথা উল্লেখ করা হলেও আমরা টিস্যু পেপার বিক্রি করি না। এসব কারণে আমার মক্কেলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করছি।
কমিশন আরও তদন্ত করা হবে বলে মামলা দুটি শুনানির জন্য আগামী ৭ ডিসেম্বর পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা