আপডেট : ১ মার্চ, ২০২৪ ১২:২৪
রাতে বাকবিতণ্ডা, সকালে মিলল মেস পরিচালিকার মরদেহ
গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

রাতে বাকবিতণ্ডা, সকালে মিলল মেস পরিচালিকার মরদেহ

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় পাওনা টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডার ঘটনার আট ঘণ্টা পর এক মেস পরিচালিকার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার গায়ের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন থাকায় ধারণ করা হচ্ছে তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।

নিহত ওই মেস পরিচালিকার নাম মাবিয়া খাতুন (৫৫)। তিনি খুলনা জেলার তেরোখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ইউনিয়নের হিন্দু কুশলা গ্রামের আব্দুল গাফফার মোল্লার স্ত্রী বলে জানা গেছে। গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে একটি বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া থাকতেন তিনি।

নিহতের স্বামী আব্দুল গাফফার মোল্লা জানান, ২০১৩ সালের দিকে জীবন জীবিকার তাগিদে তারা মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবানীপুর এলাকায় চলে আসেন। স্থানীয় আবুল কাশেমের বাড়িতে ভাড়া থেকে একটি মেস পরিচালনা করতেন মাবিয়া খাতুন। বার্ধক্য জনিত কারণে অন্য কোনো কাজ করতে না পারায় স্ত্রীকে সহযোগিতা করতেন তিনি। ৩০-৪০ জন শ্রমিক তাদের মেসে খাবার খেতেন। তবে খাবার খেয়ে দীর্ঘদিন ধরে টাকা না দেওয়ায় বিল্লাল নামে এক শ্রমিকের সাথে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে বাকবিতণ্ডা হয় মাবিয়ার। এ সময় বিল্লাল টাকা দিবেন না বলে জানিয়ে মাবিয়া খাতুনকে উল্টো দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনার কিছু সময় পরে পারিবারিক কাজকর্ম শেষ করে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। প্রতিদিন ভোরে মাবিয়া খাতুন মেসে রান্না করতে যান, তবে আজকে না যাওয়ায় মেসের লোকজন ভোর ৫টার দিকে তাকে ডাকতে আসে। এ সময় তাকে ঘরে না দেখতে পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি শুর করেন তিনি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তাদের বসতঘরের অদূরে একটি শৌচাগারের পেছনে মাবিয়ার মরদহ দেখতে পান তারা। গামছা দিয়ে মরদেহটির মুখ প্যাচানো ছিল মাথায়-সহ গায়ের বিভিন্ন জায়গায় ইট জাতীয় কোন কিছুর আঘাত রয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশে খবর দেন তিনি। বিষয়টিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে এ ঘটনার দোষীদের বিচার দাবি করেছেন তিনি।

ঘটনার পর থেকে বিল্লাল নামে ওই শ্রমিক পলাতক রয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

বিল্লালের সহকর্মী প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘বিল্লাল হোসেন্দী অর্থনৈতিক অঞ্চলে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতো। শুনেছি তার বাড়ি বরিশাল। এর বেশি কিছুই জানি না। তবে বিল্লালের স্বভাব চরিত্র ভালো ছিল না সে মাদকাসক্ত ছিল।’

গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রাজিব খান বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বিষয়টি আমাদের কাছে হত্যাকাণ্ড বলে মনে হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানাতে পারবো।’