কালভাট ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাসহ আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থার সবই আছে, শুধু নেই খালটি। দৃশ্যটি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের। এই ইউনিয়নের একসময়ের প্রবাহমান বড় ভাইজোড়া খালটি এখন মৃতপ্রায়। খালটির বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাছ চাষ করার কারণে খালটি এখন মরতে বসেছে। এ ইউনিয়নের ছোট ভাইজোড়াসহ অন্য যে খালগুলো রয়েছে তার প্রায় সবগুলোর চিত্র একই। এই ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের মধ্যে চলছে খাল দখল করে মাছের ঘের করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা।
স্থানীয়রা জানান, সরকারি খালে প্রভাবশালীদের মাছের ঘের করার কারণে এলাকায় ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চলতে থাকায় একসময়ের প্রবাহমান বড় ভাইজোড়া খালটি এখন মরতে বসেছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের অন্য সব খালের অবস্থা একই। এই প্রভাবশালীরা এতটাই ক্ষমতাধর যে, কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা কথা বলার সাহস পায় না।
মল্লিকের বাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সুমন হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ইউনিয়নের প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে কতিপয়ের লোক খাল দখল করে মাছ চাষ করে আসছেন। ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা ছোট ভাইজোড়া ও বড় ভাইজোড়া খালের বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার কারণে সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছে, পাশাপাশি কৃষকরা চরম বিড়ম্বনায় পড়ছেন।
স্থানীয় কৃষক প্রকাশ মণ্ডল বলেন, ‘১০ বছর ধরে খালটি প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছেন। একটা খাল তো মরেই গেছে। যারা এই খাল দখল করেছে, তাদের নাম নিলে তো এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে খাল দুটি অবমুক্ত করার দাবি জানাই।’
মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নেপাল মণ্ডল বলেন, ‘সাবেক চেয়ারম্যান এবং এলাকার কতিপয় সন্ত্রাসী ও উচ্ছৃঙ্খল লোক প্রায় ১০ বছর ধরে খাল দুটি দখল করে মাছ চাষ করে আসছে। আমরা একাধিকবার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সবাইকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের অত্যাচারে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়। আমরা এই খাল দখলকারী ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা