হে ঘুমন্ত পিতা,
চিরনিদ্রায় তুমি এখন কেমন আছো?
অজানা দেশে পাথর চোখে তুমি কি স্বপ্ন দেখো?
তুমি কি এখনো ধানসিঁড়ির তীরে বেড়াতে আসো?
সুখসাগরে তুমি কেমন আছো?
তোমার বজ্রকণ্ঠ আমরা আজও শুনি-
পদ্মা নদীর তীরে, লক্ষ মানুষের ভিড়ে,
আজও বেঁচে আছো তুমি সবার হৃদয়ে।
পিতা, ক্ষমা করো আমায়
তোমার স্বপ্নকে আমি ছুঁয়ে দেখতে পারিনি
পেটের দায়ে কাজ করি আমি সকাল-রাত্রি
তোমার ছবি বাঁধিয়ে রেখেছি হৃদয়ে
তবুও নিলামের বাজারে বিক্রি হইনি আমি এখনো,
আমি নেতা হতে পারিনি,
দাঁড়িয়ে থাকি আমি নেতাদের পিছনে
তোমার অচেনা, পাথরের নিষ্ঠুর এই শহরে।
পিতা, তোমার রূপসী বাংলা এখন নতুন রূপে,
তবে, কম্বল চোরেরা এখনো আছে এদিকে-সেদিকে,
মুক্তিরা অনেকেই বেঁচে আছে লাজুক চোখে-
অস্ত্রসহ যুদ্ধের ট্রেনিং জমা দিয়েছে অনেক আগেই।
জিন্না-টুপিওয়ালাদের এখনো পাওয়া যায়,
মার্কিনিরা এখনো তাদের চালায়
অস্ত্রবিহীন আমি যুদ্ধ করে চলেছি
তোমার স্বপ্নের লাল সবুজের লাগি
তুমি এসে দেখে যাও, ক্ষুধা নেই এখানে
টুপির চেয়ে শস্য এখন অনেক বেশি,
তবে আমি মাংস, পিঁয়াজ আর খেজুর খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি;
অপুষ্ট গ্রামে আর মেঠোপথ নেই বললেই চলে,
চিঠি, টেলিগ্রাম, ডাকপিয়নও নেই,
বিজলির আলোতে তোমার রূপসী আলোকিত;
নদী পারাপারের জন্য এখন আমরা ভিক্ষা করি না,
পদ্মা, যমুনা, মেঘনা পাড়ি দিই নিমেষেই,
উড়ালসেতুতে দাঁড়িয়ে অন্যরকম অনুভূত হয়,
নিজেকে আর ক্ষুদ্র লাগে না নক্ষত্রের কাছে
দুঃখ শুধু এতটুকুই, তুমি দেখলে না কিছুই ।
এখন আমি কবিতা লিখি ভালোবাসার,
তোমার মতো তর্জনী উঁচিয়ে বলতে ইচ্ছে হয় -
লিখতে ইচ্ছে হয়,
‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না’।
কি সুন্দর সেই কথা, হৃদয়েতে গাঁথা !
জয় বাংলা, জয় মুক্তির পিতা,
শুভ জন্মদিন বাংলার মৃত্যুঞ্জয়ী নেতা।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা