আপডেট : ৩০ মার্চ, ২০২৪ ১৯:২১
বিরতি রেষ্টুরেন্টে যাত্রীদের সেহেরী ও ইফতারির গলাকাটা মূল্য
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিরতি রেষ্টুরেন্টে যাত্রীদের সেহেরী ও ইফতারির গলাকাটা মূল্য

মহাসড়কে যাত্রাবিরতির স্থানের একটি রেস্তোরাঁর ইফতারসামগ্রী। ছবি: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

দেশের সড়ক, রেল ও নৌ-পথে যাতায়াতের মাঝপথে যাত্রীরা অনেক সময় হাইওয়ের বিরতি রেষ্টুরেন্টগুলোতে সেহেরি ও ইফতার করেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি দামে খাবার বিক্রি করছে রেস্টুরেন্টগুলো। আর এতে নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র যাত্রীরা দুর্ভোগে পরছেন বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
শনিবার যাত্রী কল্যাণ সমতিরি মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগ করে সংস্থাটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সড়ক পথে দুরপাল্লার যাতায়াতে মাঝপথে বাস কোম্পানী কর্তৃক নির্ধারিত বিরতি রেষ্টুরেন্টগুলোতে বাসের যাত্রীসাধারণকে সেহেরী ও ইফতারি করতে হয়। দেখা যাচ্ছে, ইফতারিতে ১টি পেয়াজু , ১টি বেগুনী, ১পিস জিলাপি, ১/২টি খেজুর, ১টি আলুর চপ, ৫০ গ্রাম মুড়ি, ৫০ গ্রাম ছোলা, ১টি ছোট সাইজের কলা অথবা ১ পিছ ৪ ভাগের ১ অংশ আপেল, ১ গ্লাস সরবত, ২৫০ এমএল ১ বোতল পানি সরবরাহ করে থাকে। এসব ইফতারি যেকোন সাধারণ রেস্টুরেন্ট থেকে কিনতে সাধারণত ৮০ থেকে ৯০ টাকা লাগে। তবে কুমিল্লা, লোহাগড়া, বগুড়া, সিরাজগঞ্জের যে কোন হাইওয়ে বিরতি রেষ্টুরেন্টগুলোতে এইরকম ইফতারির প্লেট প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা হারে মূল্য আদায় করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে যেসব কোম্পানির বাস যেসব রেস্টুরেন্টে যাত্রা বিরতি দেয় ওইসব রেষ্টুরেন্টগুলোর সঙ্গে বাস কোম্পানীর বড় অংকের বাৎসরিক কমিশন বাণিজ্য রয়েছে। এছাড়াও বাসের চালক, সুপারভাইজার ও সহকারিসহ কোম্পানির অন্যান্য স্টাফরা এসব রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন বিনামূল্য খাওয়া দাওয়া করেন। এসব কারণে রেষ্টুরেন্টগুলো যাত্রীসাধারণের কাছে প্রতিটি খাবারের গলাকাটা মূল্য আদায় করছে।
অপরদিকে, সেহেরীতে ছোট ছোট ৫ পিছ গরুর মাংস এসব হোটেলগুলো ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ৩পিস মাংস থাকলে ১পিস হাড্ডি, ১পিস চর্বি থাকে। ২৫০ গ্রাম সাইজের ১পিস তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ২০০ গ্রাম সাইজের রুই ২৫০ টাকা, ২০০ গ্রাম ওজনে ২পিস পাবদা ২০০ টাকা হারে মূল্য আদায় করা হচ্ছে। অধিকাংশ রেষ্টুরেন্টে কেউ ১ প্লেট ভাত খেলেও ৩ প্লেট ভাতের বিল আদায়ের অপকৌশল হিসেবে জন প্রতি ভাতের বিল ৫০/৬০ টাকা হারে আদায় করছে। দেড় কাপের সমপরিমান পাতলা ডালের মূল্য ২০ টাকা আদায় করছেন যা ১ প্লেট ভাত কোনরকমে ভেজানো যায়।
এদিকে রেলপথে চলাচলকারী ট্রেনে যাত্রীদের সেহেরী ও ইফতারির মূল্য তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি কোচে লাগানো এবং রশিদ প্রদান করে মূল্য আদায়ের নিয়ম লংঘন করে ইচ্ছেমত মূল্য আদায় করছে রেল কর্তৃকপক্ষের নিযুক্ত বেসরকারী ইজারাদারেরা।
নৌ-পথের বিলাশবহুল লঞ্চের কেন্টিনগুলোতে পরিবেশিত সেহেরি ও ইফতারির গলাকাটা মূল্য আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ যাত্রীদের সেহেরি ও ইফতারির মূল্য নিয়ন্ত্রনে রেষ্টুরেন্ট মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।