আপডেট : ১১ মে, ২০২৪ ১৮:০২
‘বাংলাদেশকে স্মার্ট বানাতে কালেকটিভ অ্যাপ্রোচ প্রয়োজন’
ঢাবি প্রতিনিধি

‘বাংলাদেশকে স্মার্ট বানাতে কালেকটিভ অ্যাপ্রোচ প্রয়োজন’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত শনিবার এক সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ছবি: দৈনিক বাংলা

বাংলাদেশকে স্মার্ট বানাতে হলে কালেকটিভ অ্যাপ্রোচের (সমন্বিত প্রচেষ্টা) প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এক সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিমত ব্যাক্ত করেন।

সমবায়মন্ত্রী বলেন, ‘সবার জায়গা থেকে সবাইকে কাজ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা এবং সমন্বয় থাকতে হবে। আপনার দায়িত্ব আপনি পালন করলে আর আমার দায়িত্ব আমি পালন করলে তবেই বাংলাদেশ এগোবে। আমি মন্ত্রী, আমি বড় পদধারী, অনেক সুযোগ সুবিধা আমার। কিন্তু তারপরও আমি সব কিছু না। আপনার এবং আপনাদের ভূমিকাও মূখ্য। সেটি হলো নিজেদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করা।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘২০৪১ সালে আমাদের যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি সেটি করতে হলে আমাদের পার ক্যাপিটাল ইনকাম সাড়ে বারো হাজার ডলার লাগবে। সিঙ্গাপুরে বর্তমানে এটি দেড় লক্ষ ডলার। তারা কীভাবে এটি করেছে? সেটা হলো কমিটমেন্ট। যারা এই কমিটমেন্ট বা ট্র্যাক লাইনের বাইরে গেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠিনভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই পিক অ্যান্ড চয়েজ কোনো আইন হতে পারে না। আপনার ভাতিজাকে দেখলে ছেড়ে দিবেন আর আরেকজনকে দেখলে জেলে দিবেন এগুলোর মাধ্যমে কাজ হবে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য কাজ করছি। সবাইকে কাজ করতে হবে। সারা পৃথিবীর মানুষ উন্নত হচ্ছে। ইনশাল্লাহ আমরাও উন্নত হব। আর যদি না হই তাহলে এটির জন্য আমরা সবাই দায়ী। অপরচুনিটিতে আমাদের কোন ড্রব্যাক নেই। জাপানে কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নেই যেটা তাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে। কিন্তু তারপরও তারা আজ কতটা উন্নত। আমাদের তো কিছুটা হলেও সম্পদ আছে। সুতরাং আমাদের সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে আমাদের দেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন। আমাদের গণতন্ত্রকে আফহোল্ড করতে কাজ করার ব্যাপারে আমরা অবশ্যই কমিটেড। কিন্তু আপনি যদি আমাদেরকে ইউরোপের গণতন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করেন যারা কোনো বাধা ছাড়াই শতশত বছর গণতন্ত্র চর্চা করেছে, এটা কোন সঠিক তুলনা হতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘২০ বছরের সামরিক শাসন বাদ দিলে আমাদের গণতন্ত্রের যাত্রা ৩০ বছরের বেশি নয়। সুতরাং ২০০ বছরের সঙ্গে ৩০ বছরের তুলনা কখনও হয় না। সুতরাং আমরা আস্তে আস্তে এগোচ্ছি। না আগালে আমাদের এতো পরিবর্তন আসতো না। আমরা শুধু সমালোচনাই করি। কিন্তু হাজার-লক্ষ কাজ তো হয়েছে। সেটার কথাও বলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমার শুধু সমালোচনাই করা হয় আমি যে অনেক ভালো কাজ করেছি সেটা যদি একবারও স্বীকার না করা হয় তাহলে আমার মনোবল ভেঙে যাবে। সুতরাং ভালো কাজের প্রশংসা না করে শুধু সমালোচনা করলে আমরা ধরে নেব আপনি দেশের জন্য কাজ করছেন না। আপনি শুধু কিছু সেন্টিমেন্ট পেতে কাজ করছেন, যেটি কারও জন্যই ভালো না।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে অ্যাকশনিস্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আ.ন.ম. ফখরুল আমিন ফরহাদ বলেন, ‘তরুণদের সঙ্গে পলিসি মেকারদের সংযোগ করে দেওয়া, তরুণদের ভয়েস উনাদের কাছে পৌঁছিয়ে দেওয়া এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গঠতে হলে সবার যে মতামত সেই মতামত নেওয়ার জন্যই আমাদের আজকের আয়োজন।’

সভাপতির বক্তব্যে অ্যাকশনিস্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন শাহরিন শাহজাহান নাওমি বলেন, ‘অ্যাকশনিস্ট ফাউন্ডেশন সব সময় তারুণ্যের শক্তি এবং সম্ভাবনাতে বিশ্বাস করে। আমাদের অতিথিরা আজকে শক্তি এবং সম্ভাবনার প্রতি নিজেদের অকুন্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন এটিই আমাদের প্রোগ্রামের সার্থকতা। আমরা সবাই নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাব এবং বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করব।’

এরপর ‘ইয়ুথ লিডারশীপ স্কিলস ফর স্মার্ট বাংলাদেশ' শীর্ষক প্যানেল ডিসকাশনে অংশ নেন স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এমপি, বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ মোবারক আহমেদ খান, উইমেন ইন ডিজিটাল এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া নীলা, এটুআইয়ের প্রোগ্রাম স্পেশালিষ্ট মানিক মাহমুদ। এই প্যানেল ডিসকাশন পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. গোলাম সরওয়ার।