আপডেট : ১২ জুন, ২০২৪ ২১:৫৪
বোলিং-ব্যাটিং ঝংকার বাংলাদেশকে সুপার এইটে নিতে পারে
চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত

বোলিং-ব্যাটিং ঝংকার বাংলাদেশকে সুপার এইটে নিতে পারে

প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আশা জাগালেও ৪ রানে হেরে গেছে। ২ ম্যাচ থেকে দুই পয়েন্ট নিয়ে ডি-গ্রুপের ২ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। আবারও জয়ের ধারায় ফিরতে এবং সুপার এইটে জায়গা শক্ত করতে আগামীকাল মাঠে নামছে টাইগাররা। এবার আর যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত উইকেট নয়, সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

ডি-গ্রুপে বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডস দুই দলেরই ম্যাচ এবং পয়েন্ট সমান। দুই দলই মাঠে নেমেছে দুটি করে ম্যাচে; সেখানে একটি করে জয় এবং পরাজয় আছে তাদের নামের পাশে। তবে রানরেটে এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে নেদারল্যান্ডস। এ ম্যাচেই খোলাসা হয়ে যাবে সহজ নাকি জটিল সমীকরণে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।

কাগজ-কলমে, শক্তি-সামর্থ্যে কিংবা অতীত পরিসংখ্যানে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশই। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে বাংলাদেশই। বাংলাদেশের অবস্থান ৯ম স্থানে। অন্যদিকে তিন ধাপ পিছিয়ে স্কটল্যান্ড আছে ১২তম স্থানে।

ক্রিকেটের ছোট এ সংস্করণে খাতা-কলমের হিসাব কিংবা র‌্যাঙ্কিংই শেষ নয়। ছোট-বড় বলে আলাদাও করা যায় না কোনো দলকে। নিজেদের দিনে যেকোনো কিছুই ঘটাতে পারে যেকোনো দল। তার ওপর বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্ম একটা দুশ্চিন্তার কারণ। তাই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

মুখোমুখি পরিসংখ্যান এগিয়ে রাখছে বাংলাদেশকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে নেদারল্যান্ডসকে দুইবার হারানোর স্মৃতি আছে টাইগারদের। ২০১৬ সালে ধর্মশালায় এবং ২০২২ সালে হোবার্টে ডাচদের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে চারবারের সাক্ষাতে ডাচদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা।

ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে অবশ্য ৮৭ রানের হারের লজ্জা পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওই হারের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টাইগাররা। আবারও অন্য এক বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশের। তবে এ ফরম্যাটটা টি-টোয়েন্টি বলেই বাংলাদেশ আশা দেখতে পারে। টাইগাররা সেই হারের প্রতিশোধ নিতেই মুখিয়ে থাকবে।

বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসান সাকিবও বলেছিলেন তেমনই, ‘নেদারল্যান্ডসের কাছে আমরা যে ম্যাচে হেরেছিলাম, সেটি এখন অতীত। ওটা ছিল ওয়ানডে ফরম্যাট। কিন্তু এটা ক্রিকেটের ভিন্ন ফরম্যাট।’

এ ম্যাচেও বাংলাদেশের যত চিন্তা কিংবা দুশ্চিন্তার কারণ সেই একই। ব্যাটারদের ব্যর্থতা। সেটার সঙ্গে যোগ হয়েছে দলের অন্যতম সেরা তারকা সাকিব আল হাসানের অফফর্ম। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তিনি ফর্ম ফিরে পাবেন বলেই প্রত্যাশা টাইগার শিবিরে। গত দুই ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি সাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের কারণ হিসেবে ব্যাট হাতে সাকিবের রান না পাওয়াকে দোষারোপ করা হচ্ছে। তবে সাকিবের অফফর্মের পরও বাংলাদেশ দলে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচেই দুর্দান্ত বল করেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। কমিয়েছেন ব্যাটারদের চাপ। কিন্তু তবুও ব্যর্থতার খোলস থেকে বের হতে পারছেন না বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটাররা। এ ম্যাচেও তেমনটা হলে ২০০৩ সালের লজ্জার স্মৃতি আবারও ফেরত আসতে পারে।

নেদাল্যান্ডসের বিপক্ষে কোনো কারণে পা হড়কালেও বাংলাদেশের সুযোগ থাকবে সুপার এইটে কোয়ালিফাই করা। সে জন্য অবশ্য হারের ব্যবধানটা কম রাখতে হবে এবং নেপালের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করতে হবে। এমনসব জটিল সমীকরণে যেতে না চাইলে এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের।