ঢাকার পাশাপাশি বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও একের পর এক বাস্তবায়ন হচ্ছে উন্নয়ন প্রকল্প। সেই ধারাবাহিকতায় এবার গভীর সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে তৈরি হচ্ছে বে-টার্মিনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। এ প্রকল্পে বাংলাদেশকে বড় অঙ্কের ঋণ-সহায়তা দিয়ে পাশে থাকছে উন্নয়ন অংশীদার বিশ্বব্যাংক।
শনিবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প ও সমুদ্রবন্দর উন্নয়নে পাশে রয়েছে বিশ্বব্যাংক। গুরুত্বপূর্ণ এ অবকাঠামোতে বিনিয়োগ সহায়তা হিসেবে ৬৫০ মিলিয়ন বা ৬৫ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটি। বর্তমান ব্যাংক রেট হিসেবে এ অর্থ ৭ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার সমান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বে-টার্মিনাল নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানি খরচ কমে আসবে। ফলে বেসরকারি বিনিয়োগে গতি আসবে বলেও আশাবাদ জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বোর্ড অব এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরসে এ সহায়তা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরে গতকাল ঢাকা অফিস থেকে গণমাধ্যমকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়। সামুদ্রিক এই অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প স্রোত ও আবহাওয়ার চরম প্রতিকূল শক্তি থেকে পোতাশ্রয়কে রক্ষা করবে। এ জন্য ৬ কিলিমিটার জলবায়ু- স্থিতিস্থাপক ব্রেকওয়াটার নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া বন্দর বেসিন, প্রবেশদ্বার ও অ্যাক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং করা হবে বলেও জানা গেছে। নতুন এই টার্মিনাল বিশ্বের শীর্ষ টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলো দ্বারা পরিচালিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এর মাধ্যমে প্যানাম্যাক্স জাহাজের মতো বড় আকারের জাহাজ বন্দরে ঢুকতে পারবে। সেই সঙ্গে জাহাজগুলোতে মালামাল ওঠানো কিংবা নামানোর সময় কমবে। ফলে প্রতিদিন আনুমানিক ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেক বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বন্দর হিসেবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল, কিন্তু এ বন্দরের সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে। বে-টার্মিনাল নির্মাণ এদেশের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবহন ব্যয় ও সময় হ্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা সক্ষমতার উন্নতি হবে। পরিবহন ব্যয় কমবে ও বিশ্ববাজারে নতুন সুযোগ তৈরি হবে।’
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও প্রকল্পের প্রধান হুয়া টান বলেন, ‘বে-টার্মিনালটি সমুদ্রবন্দর অবকাঠামো আধুনিক করে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যোগাযোগ বাড়াতে সহায়তা করবে।’ বেসরকারি খাতের সঙ্গে আরও একটি বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চায় বিশ্বব্যাংকের বেসরকারি খাত-বিষয়ক প্রতিষ্ঠান আইএফসি বলেও জানানো হয়েছে। সব মিলে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উঠবে বলে আশাবাদ জানানো হয়। এ ছাড়া ব্যবসায়ী, শিপিং কোম্পানি, আমদানি ও রপ্তানিকারক মিলে প্রায় ১০ লাখ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই বে-টার্মিনালের সুবিধা ভোগ করতে পারবে বলেও জানানো হয়েছে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা