বিবর্ণতায় শেষ হয়েছে ব্রাজিলের কোপা আমেরিকার মিশন। কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরেছে সেলেসাওরা। পুরো টুর্নামেন্টেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। আশার আলো হয়ে উঠতে পারেনি রদ্রিগো, ভিনিসিয়াস, রাফিনিয়ারা। একের পর এক ব্যর্থতায় ভুগিয়েছে দলকে। আক্রমণভাবে একজন যোগ্য নেতার বড্ড অভাব ছিল হলুদ শিবিরে। জোগো বোনিতের দেশটি যেন এখন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হতে পারে দলের প্রাণ ভোমড়া নেইমার জুনিয়রের দলে ফেরা।
ব্রাজিলের এই দুর্দশার চিত্রটা বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে নেমে নেইমারের ইনজুরিতে পড়ার পর থেকেই আরও বেড়েছে। এরপর হেরেছে উরুগুয়ে কলম্বিয়ার বিপক্ষে। তাইতো কোপা আমেরিকা শুরুর আগে বিজ্ঞাপনের জন্য রোনালদিনিয়োর বলা কথাগুলোই যেন এই ব্রাজিলের জন্য সত্যির খুব কাছাকাছি। বিশ্বকাপ জয়ী বলেছিলেন, দলে নিবেদন ও দৃঢ়তার অভাব রয়েছে, ‘সবকিছুই অনুপস্থিত, তাড়না, উচ্ছ্বাস… তাদের ভালো খেলতে হবে। তাই আমি তাদের কোনো ম্যাচই দেখব না। আমি ব্রাজিলের খেলা বর্জন করব।’
কোস্টারিকা ম্যাচের পর গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের সঙ্গে বাহাসে জড়ালেন দানিলো। অধিনায়ককে ঠাণ্ডা করতে একরকম ছুটে এলেন নেইমার। দৃশ্যটা একরকম প্রতীকীও। বিবর্ণ ফুটবলে মাঠে নিদারুণ ভোগান্তিতে থাকা ব্রাজিল যেন মাঠেও দলের সেরা তারকার এমন ভূমিকার অপেক্ষায়।
টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়ার পর কোচ দরিভাল জুনিয়র, এন্দ্রিকসহ যারাই গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন, সবাই বলেছেন বাছাই উতরে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়া তাদের মূল লক্ষ্য।
ব্রাজিলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বলছে, এই লক্ষ্য পূরণে নেইমারের উপস্থিতি খুবই জরুরি। হাঁটুর চোটে গত বছরের অক্টোবর থেকে মাঠের বাইরে আছেন এই তারকা ফরোয়ার্ড। এই সময়ে প্রীতিম্যাচ বাদে খেলা ৬ ম্যাচে কেবল ছয় গোল দিতে পেরেছে দলটি। এর চারটিই এক ম্যাচে, কোপা আমেরিকায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে। জয়ও পেয়েছে কেবল ওই ম্যাচেই। তিন ম্যাচে কোনো গোলই করতে পারেনি তারা।
আবার যখন ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের লড়াইয়ে নামবে ব্রাজিল তখন তাদের সঙ্গী হবে টানা চার ম্যাচে জয়শূন্য থাকার তেতো স্মৃতি। ২০০১ সালের পর প্রথমবার বাছাইয়ে টানা তিন ম্যাচ হারা দলটি ৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় আছে ষষ্ঠ স্থানে।
ব্রাজিলের হয়ে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১২৮ ম্যাচ খেলেছেন নেইমার। ১৮ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেকের পর দলটির হয়ে গোল করেছেন তিনি ৭৯টি। নিজের চোট, দলের বিবর্ণ পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনেই হয়তো দাঁড়িয়ে নেইমার।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা