শিল্প খাতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। একই সঙ্গে গ্যাসের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, চামড়া ও সার কারখানাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শনিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে থেকে গণ-আন্দোলনে ছাত্র-জনতার যে ম্যান্ডেট সেটা নিয়েই সাধ্যমতো কাজ করার পাশাপাাশি ‘সব কাজই চ্যালেঞ্জিং, দেখি কতটুকু করা যায়’ বলেও জানিয়েছেন।
আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘অগ্রাধিকার হিসেবে আমাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে, ক্ষুদ্র শিল্প নিয়ে কিছু পরিকল্পনা আছে। পরিবেশবান্ধব কাজ করার বিষয়ে চেষ্টা থাকবে। যেমন সাভারে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জাহাজশিল্প নিয়েও আলোচনা করেছি। আমরা প্রতিদিনই বসব। কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা করা দরকার করব। এখানে একটি চমৎকার টিম রয়েছে তারা খুবই অ্যাক্টিভ। আমরা চেষ্টা করে যাব আপনারা সব সময় আমাদের সহযোগী হিসেবে পাবেন।’
শিল্পের কোন বিষয়ে জোর দেওয়া হবে এবং চামড়াশিল্পে যে সংকট সেটা কাটানোর জন্য কী উদ্যোগ নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘আজকে (গতকাল) আমার প্রথম দিন। আমি কৃতজ্ঞ ছুটির দিনেও আমার সহকর্মীরা এসেছেন। আমাদের যেসব খাতে সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিশেষ করে আমাদের গ্যাসের সংকটের জন্য গত ছয় মাস আমাদের চারটি সারকারখানা বন্ধ ছিল। শুধু ঘোড়াশাল সারকারখানা উৎপাদনে আছে। চামড়া খাতকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। গ্যাসের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, চামড়া ও সার কারখানাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবে সব কাজই চ্যালেঞ্জিং, দেখি কতটুকু করা যায়।’
লোকসানের বিষয় কী পদক্ষেপ নেবেন, ‘গ্যাস সংকট সমাধানে কী পদক্ষেপ নেবেন জানতে চাইলে আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা এসব বিষয় জানতে পেরেছি, আলোচনা করেছি, এ ব্যাপারে যতদূর সম্ভব কাজ করব। সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে সার আমদানিতে। যাতে কৃষকদের কোনো সমস্যা না হয়। গ্যাসের জন্য এ সমস্যাটা না হয়। এর ফলে শিল্পের যে লোকসান হয় সেটা কমে যাবে।’
দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, ‘এত মানুষের রক্তের ওপর দিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা দায়িত্বে এসেছি। এখানে দুর্নীতির বিষয়ে আমাদের কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় নেই। অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে থেকে গণ-আন্দোলনে ছাত্র-জনতার যে ম্যান্ডেট সেটা নিয়েই সাধ্যমতো কাজ করব। দুর্নীতির বিষয় তো প্রশ্নই আসে না। আমরা সবাই একটা টিম আপনারাও এর একটা অংশ। সবাই মিলে কাজ করলে আমরা সব কিছু ওভারকাম করতে পারব।’
‘আমাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে। আমাদের টিম এ বিষয়ে সজাগ থাকবে। আমাদের কাছে যা অন্যায় অবিচারে অভিযোগগুলো এসেছে ভবিষ্যতে যাতে এ বিষয়ে ব্যতিক্রম হয় সেজন্যই আমাদের দায়িত্বে আসা’- যোগ করে বললেন শিল্প উপদেষ্টা।
দেশের দ্বিতীয় রপ্তানি খাত চামড়াশিল্পের বিদ্যমান সংকট কাটাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা জানতে চান এক সাংবাদিক। এ প্রসঙ্গে শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাতে আমাদের যেসব চ্যালেঞ্জ আছে, সমস্যা আছে; সেগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করব।’ এ বিষয়ে উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন। আপনারা জানেন, গ্যাসের প্রাপ্যতা না থাকায় ছয় মাস ধরে আমাদের সারকারখানাগুলো বন্ধ। শুধু ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া প্রকল্প এখন উৎপাদনে আছে। এ ছাড়া চামড়া শিল্পনগরীর বিষয়গুলো আছে; এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ঠিক করে আগামীকাল থেকেই পুরোদমে কাজ শুরুর জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা