কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইকরামুল হক সাজিদ মারা গেছেন। দীর্ঘ ১০ দিন রাজধানী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ বুধবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান।
সাজিদের সহপাঠী, শিক্ষকবৃন্দ ও পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুরে আন্দোলনরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এরপর থেকে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সাজিদের সহপাঠীরা জানান, মিরপুর এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিয়ে সাজিদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশের ছোড়া একটি গুলি তার মাথার পেছনে লাগে। মাথা ভেদ করে বুলেটটি তার চোখের পেছনে আটকে যায়। গুরুতর আহতাবস্থায় তার সহপাঠীরা তাকে সিএমএইচে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন। প্রাথমিক অবস্থায় মাথায় আঘাত লেগে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। অপারেশনসহ এ পর্যন্ত তাকে আট ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে।
সিএমএইচের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আট দিনের বেশি পার হয়ে গেলেও তার শরীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মো. সোহান বলেন, কোটা আন্দোলন আহত হওয়া সাজিদের মৃত্যুতে আমরা পুরো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শোকাহত। তার মরদেহ নিতে আমরা সিএমএইচে যাচ্ছি। ক্যাম্পাসে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে তার চিকিৎসার ব্যয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সহপাঠীরা। মঙ্গলবার সাজিদের চিকিৎসার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়।
সাজিদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা