বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এদিন সারা দেশে বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলের পড়ে পুলিশ সদস্যরা। সারা দেশে বিভিন্ন থানা ও পুলিশের স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ, হামলার ও ভাঙচুর করা হয়। লুটে নেওয়া হয় অস্ত্র-গুলিসহ বিভিন্ন জিনসিপত্র।
লুটে নেওয়া অস্ত্র ও গোলাকবারুদের মধ্যে পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ৪০৬টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও ১২ হাজার ৮৪৩টি গুলি উদ্ধার করেছে। আজ বুধবার পুলিশ ও র্যাব সদর দপ্তর থেকে পৃথক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, সারা দেশ থেকে সম্প্রতি লুণ্ঠিত বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের মধ্যে ৩০৯টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ৬ হাজার ২৫৮ রাউন্ড গুলি, ৩১৮টি টিয়ার গ্যাস সেল, ২টি টিয়ার গ্যাস গ্রেনেড এবং ৯টি সাউন্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, পুলিশের বিভিন্ন থানা ও স্থাপনা থেকে অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার চলছে। কারো কাছে অবৈধ অস্ত্র থাকলে নিকটস্থ থানায় জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সারা দেশে ৬৩৯টি থানার মধ্যে ৬৩৪টি থানার সেবা কার্যক্রম এরইমধ্যে শুরু হয়েছে। এছাড়া ১১০টি মেট্রোপলিটন থানার মধ্যে ১১০টি এবং জেলার ৫২৯টি থানার মধ্যে ৫২৪টির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া ৫টি থানা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস্, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সকল সরঞ্জামাদি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় এসব থানার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে এই ৫টি থানার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।
এদিকে, বিকেলে র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান বলেন, গত ৫ আগস্ট দেশের বিভিন্ন স্থানে থানা, ফাঁড়ি ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনা ঘটে।
পরবর্তীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সারা দেশে থানা পুলিশসহ পুলিশের অন্যান্য ইউনিটের কার্যক্রম চালু করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে র্যাব অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।
এ প্রেক্ষিতে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ স্বেচ্ছায় ফেরত প্রদান করতে র্যাব আহ্বান জানায়। এখন পর্যন্ত লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদের মধ্যে ৯৭টি অস্ত্র, ৬ হাজার ৫৮৫ রাউন্ড গোলাবারুদ ও ২৮টি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে-র্যাব-৭ উদ্ধার করে ৩৫টি অস্ত্র, ২৭৫ রাউন্ড গোলাবারুদ, ৮টি সাউন্ড গ্রেনেড ও ৫টি ম্যাগজিন। র্যাব-১০ কর্তৃক ৯টি অস্ত্র, ৬৬১ রাউন্ড গোলাবারুদ, ৯টি সাউন্ড গ্রেনেড ও মাল্টিটিয়ার গ্রেনেড এবং ১০টি ম্যাগজিন। র্যাব-১১ উদ্ধার করেছে ১০টি অস্ত্র, ৭৭ রাউন্ড গোলাবারুদ, ৪টি সাউন্ড গ্রেনেড ও ২টি ম্যাগজিন। র্যাব-১২ কর্তৃক ৪৩টি অস্ত্র, ৫৫৫৯ রাউন্ড গোলাবারুদ ও ১১টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার কার্যক্রমসহ নিয়মিত টহল ও নজরদারি অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানিয়েছে র্যাব।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা