সুন্দরবন বাংলাদেশের দক্ষিণ অংশে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের ব-দ্বীপ এলাকায় অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম জোয়ারধৌত উষ্ণমণ্ডলীয় বাদাবন। আর বাদাবন হলো নদীর মোহনায় সমুদ্রের নোনা জলের কাদায় জন্মানো চির সবুজ বনভূমি, যার ঠেসমূল ও শ্বাসমূল আছে বিধায় সরাসরি অক্সিজেন গ্রহণপূর্বক লবণাক্ত পানি-কাদায় জন্মানো ও বেড়ে ওঠার পথ সুগম করে থাকে। এটি আরও সহজভাবে যদি বলি, তাহলে এক কথায় বলতে হয় শ্বাসমূলবিশিষ্ট লবণাক্ত পানি-মাটির বন। তাই এ বনকে ম্যানগ্রোভ বন বলে অভিহিত করা হয়। উল্লেখ্য, কর্কটক্রান্তির সামান্য দক্ষিণে পশ্চিমবঙ্গ (ভারত) ও বাংলাদেশের উপকূল ধরে বিস্তৃত ২১৩০’-২২৩০’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯০০’-৮৯৫৫’ পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যবর্তী স্থানে এ বনের অবস্থান। এ প্রেক্ষাপটে উল্লেখ্য যে প্রায় ২০ লাখ বছর আগে এ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ জন্মলাভ করে। আর সুন্দরবন ছিল এ ব-দ্বীপের দক্ষিণমুখী অগ্রসরমান অঞ্চল। হাজার বছর ধরে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রবাহিত পলিমাটি নদীর স্রোতের সঙ্গে ভাটিতে নেমে এসে ধীরে ধীরে জমা হতে থাকে বঙ্গীয় অববাহিকায়। ভারতীয় উপমহাদেশের প্রধান নদী দুটি হিমালয়ের পাদদেশে উৎপন্ন হলেও বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়েছে এ বাংলাদেশের ভূমির ওপর দিয়ে এবং এ কারণে এ অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে অনন্য এক উর্বর ভূমি। সেই সঙ্গে উজানের মিঠাপানি ও সাগরের লোনাপানির সংমিশ্রণে অসংখ্য খাল-নদীসমৃদ্ধ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সৃষ্টির একটি উপযোগী পরিবেশ গড়ে ওঠে বিধায় যার সুবাদে আমাদের এ সুন্দরবন। ভূতাত্ত্বিক গবেষণা মোতাবেক জানা যায়- আজ আমরা যে সুন্দরবন দেখতে পাই, সেটি পাঁচ থেকে সাত হাজার বছর আগে ধীরে ধীরে পরিগ্রহ করে। কালের বিচারে দীর্ঘ সময় মনে হলেও ভূতাত্ত্বিক কাল পরিসর বিবেচনায় এটি খুব একটা বেশি নয়। আর এ বঙ্গীয় এলাকার ভূমির গঠন এখনো এতটা স্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারেনি। তাছাড়া সুন্দরবনের ভূমির গঠন তো আরও অপরিপক্ব। এ বনের দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকায় এখনো নতুন নতুন চর সৃষ্টি হয়ে সুন্দরবনের অবয়ব বৃদ্ধি করছে। সত্যি কথা বলতে কি, হাজার বছর ধরে বঙ্গোপসাগর বরাবর আন্তঃস্রোতীয় প্রবাহের দরুন প্রাকৃতিকভাবে উপরিস্রোত থেকে পৃথক হওয়া পলি সঞ্চিত হয়ে গড়ে উঠেছে সুন্দরবন। এর ভৌগোলিক গঠন ব-দ্বীপীয়, যার উপরিতলে রয়েছে অসংখ্য জলধারা এবং জলতলে ছড়িয়ে আছে মাটির বেড ও দেয়াল এবং কাদা চর। এতে আরও রয়েছে সমুদ্র সমতলের গড় উচ্চতার চেয়ে উঁচুতে থাকা প্রান্তীয় তৃণভূমি, বালুতট এবং দ্বীপ; যেগুলো জুড়ে জালের মতো জড়িয়ে আছে খাল, জলতলের মাটির বেড ও দেয়াল, আদি ব-দ্বীপীয় কাদা ও সঞ্চিত পলি। সাধারণত সমুদ্রসমতল থেকে সুন্দরবনের উচ্চতা স্থানভেদে ০.৯ মিটার থেকে ২.১১ মিটার। মজার ব্যাপার হলো যে এখানের জৈবিক উপাদানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে গঠন প্রক্রিয়া ও প্রাণী বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে। নানা ধরনের গাছপালার চমৎকার সমারোহ ও বিন্যাস এবং বন্যপ্রাণীর অনন্য সমাবেশ এ বনভূমিকে চিহ্নিত করেছে এক অপরূপ প্রাকৃতিক নিদর্শন হিসেবে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র হিসেবেও এটি বিবেচিত। এখান থেকে সংগৃহীত হয় নানা কাজে ব্যবহার উপযোগী বনবৃক্ষ, আহরিত হয় প্রচুর পরিমাণ মধু, মোম ও মাছ। বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা এবং বাগেরহাট জেলার অংশবিশেষ এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাজুড়ে সুন্দরবন বিস্তৃত। পরস্পর সংযুক্ত ৪০০ নদী-নালা ও খালসহ প্রায় ২০০টি ছোট-বড় দ্বীপ ছড়িয়ে আছে সুন্দরবনের কলেবর। দুঃখের বিষয় হলো, আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগেও মূল সুন্দরবনের এলাকা ছিল প্রায় ১৬,৭০০ বর্গকিমি। বর্তমানে সংকুচিত হয়ে প্রকৃত আয়তনের এক-তৃতীয়াংশে পৌঁছেছে। আর ব্রিটিশ ভারত বিভাগের প্রাক্কালে বনের দুই-তৃতীয়াংশ পড়েছে বাংলাদেশে, বাকিটা পশ্চিমবঙ্গে (ভারত)। এ বনভূমির বর্তমান আয়তন হবে প্রায় ৪,১১০ বর্গকিমি এবং এর প্রায় ১,৭০০ বর্গকিমি জলাভূমি। বস্তুত এখন এটি অতীত সুন্দরবনের ভগ্নাংশমাত্র। আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগেও বৃহত্তর যশোর জেলা এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের পুরো এলাকা ছিল সুন্দরবনের আওতাভুক্ত সমজাতীয় গাছপালার এক বিস্তৃত বনাঞ্চল। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাও ছিল ম্যানগ্রোভ বনে আচ্ছাদিত। এ প্রেক্ষাপটে একটি কথা না বলে পারছি না। এ সূত্র ধরে উল্লেখ্য, বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত ষাটগম্বুজ মসজিদের কথা হয়তো আমরা অনেকেই জানি। বিখ্যাত দরবেশ খানজাহান আলী তার অনুসারীদের নিয়ে চতুর্দশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে সুন্দরবনের জঙ্গল পরিষ্কার করে এ মসজিদ নির্মাণ করেন। সেই সময়ে মসজিদ নির্মাণের এ এলাকা ছিল বলতে গেলে সুন্দরবনের মধ্যাঞ্চল। তখন এ অঞ্চলের বন কেটে পুরোদমে ধানের আবাদ শুরু হয়। আর ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অব্যাহতি পর সুন্দরবনের গাছপালা কেটে আবাদি জমি তৈরির প্রক্রিয়া আরও গতি লাভ করে। তা ছাড়া সুন্দরবনের জঙ্গল ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে আগ্রহী কৃষকদের কাছে বন্দোবস্ত দেওয়া শুরু হয়। এর পেছনে ধানের আবাদ করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। আর অন্যান্য কারণসহ এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সুন্দরবনের এ করুণ ও কংকালসার অবস্থার জন্য আমরা দায়ী বললে সেটি বেশি বলা হবে না।
প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী, গেওয়া, ঝামটি গরান এবং কেওড়া। ১৯০৩ সালে প্রকাশিত হিসাব মতে সর্বমোট ২৪৫টি শ্রেণি এবং ৩৩৪টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। সুন্দরবনের প্রধান গাছপালার মধ্যে অন্যতম সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুর, বাইন, হেঁতাল, গোলপাতা, খামু, লতা সুন্দরী, কেওড়া, ধুন্দুল, আমুর, ছৈলা, ওড়া, কাঁকড়া, সিংরা, ঝানা, খলশি ইত্যাদি। কিন্তু সুন্দরবনের নামের সমার্থক হিসেবে যে বৃক্ষটি জড়িয়ে আছে, সেটি সুন্দরীগাছ। সাধারণত সুন্দরবনে প্রধান তিন প্রকারের উদ্ভিদ রয়েছে, যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা; স্বাদু পানিপ্রবাহের মাত্রা এবং ভূপ্রকৃতির মাত্রার সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতার ওপর ভিত্তি করে। এ অঞ্চলজুড়ে সুন্দরী ও গেওয়ার প্রাধাণ্যের পাশাপাশি বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছে ধুন্দল এবং কেওড়া। এদিকে ঘাস ও গুল্মের মধ্যে শন, নল খাগড়া, গোলপাতা রয়েছে সুবিন্যস্তভাবে। গাছ-পালার পাশাপাশি সুন্দরবনে প্রায় ১৯ প্রজাতির বুনো আর্কিডের দেখা মেলে। এদিকে কেওড়া নতুন তৈরি হওয়া পলিভূমিকে নির্দেশ করে এবং এটি বন্যপ্রাণীর জন্য জরুরি, বিশেষ করে চিত্রা হরিণের জন্য। আর বিশ্বের বিশেষ আকর্ষণ হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার, যার অবস্থান হলো এ সুন্দরবনে যা আগেই বলেছি। এদিকে বনে ২৯০টি পাখি, ১২০টি মাছ, ৪২টি স্তন্যপায়ী, ৩৫টি সরীসৃপ এবং ৮টি উভচর প্রজাতিসহ ৪৫৯টি বন্যপ্রাণীর বাসস্থান রয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় যে বাংলাদেশের সুন্দরবনে বিভিন্ন প্রজাতির একটি বড় অংশ বিদ্যমান (যেমন- ৩০ শতাংশ সরীসৃপ, ৩৭ শতাংশ পাখি ও ৩৭ শতাংশ স্তন্যপায়ী) যা দেশের অন্যান্য এলাকায় দেখা মেলে না এবং বলতে গেলে বিরল। কিন্তু এই প্রাণী বৈচিত্র্যের মধ্যে ২ প্রজাতির উভচর, ১৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৫ প্রজাতির পাখি এবং ৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী বর্তমানে হুমকির মুখে।
এদিকে বাঘের বর্তমান সংখ্যা সুন্দরবনে ১১৪ হলেও তা বেড়ে হয়তো দাঁড়াতে পারে ২০০-তে। নিশ্চয় এ খবর আমাদের ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয়। সুন্দরবনে বাঘের প্রধান খাবার হলো চিত্রা হরিণ। অন্য প্রাণীদের মধ্যে শূকরও খায় তারা। হরিণ একেবারেই নিরীহ। সুন্দরবনে সবার চোখে বাঘ ধরা না দিলেও হরিণ কিন্তু ঠিকই চোখে পড়ে। বনের শুকনা জায়গাগুলোতে ঘুরে ঘুরে কেওড়া, গরান, সুন্দরীগাছের পাতা আর ঘাস খেতে দেখা যায়। সুন্দরবনের এই প্রাণীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। অন্য আরেক প্রজাতির হরিণও দেখা যায় এ বনে। শারীরিক গড়নে চিত্রা হরিণের চেয়ে আকারে কিছুটা ছোট। এ হরিণের নাম মায়া হরিণ। অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয়, সুন্দরবনে চিত্রা হরিণের সংখ্যা বাড়ছে। কেননা আগের বছরগুলোর তুলনায় হরিণের ওপর অত্যাচার কিছুটা কমছে এবং শিকারীদের হাতে হরিণ কম মারা পড়ছে বলে বাড়ছে এগুলোর সংখ্যা। আর বানর, বন বিড়াল, শেয়াল, সজারু ও বন্য শূকর হামেশাই চোখে পড়ে।
সুন্দরবনে জলের প্রধান প্রাণী হলো কুমির। এই বনের বেশির ভাগ নদী আর খালে কুমিরের বাস। ‘জলে কুমির, আর ডাঙ্গায় বাঘ’ কথাটি দেশের একমাত্র সুন্দরবনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এদিকে বনের বড় আকর্ষণ হলো বিভিন্ন প্রজাতির মাছরাঙা। সাধারণত ৯ প্রজাতির মাছরাঙা দেখা যায়। এ বনের সবচেয়ে ‘স্পেশাল’ মাছরাঙা হলো লাল মাছরাঙা। আর এ বনে কাঠঠোকরা, ভগীরথ, পেঁচা, মধুপায়ী, বুলবুল, শালিক, বনমোরগ, ফিঙ্গে, বাবুই, ঘুঘু, বেনে বৌ, হাড়িচাঁচা, কুলঝুরি, মুনিয়া, টুনটুনি ও দোয়েলসহ রয়েছে নানা ধরনের ছোট ছোট গায়ক পাখি। তা ছাড়া সুন্দরবনের আরেকটি আকর্ষণীয় পাখির নাম ‘সুন্দরী হাঁস’। ছোট মাছ, চিংড়ি, কীটপতঙ্গ এবং কাঁকড়া এ পাখির প্রধান খাবার। এখানে বসবাসকারী প্রায় পাখিই স্থানীয়। তবে ৫০ প্রজাতির পাখি পরিযায়ী এবং এদের অধিকাংশ হাঁসজাতীয়। এদিকে বক, সারস, হাড়গিলা, কাদা খোঁচা, লেনজা ও হট্রিটিসহ অসংখ্য উপকূলীয় প্রাণী এখানকার নদী-নালার কিনারে বিচরণ করে। সমুদ্র এবং বড় বড় নদীর উপকূল ভাগে গাংচিল, জলকবুতর ও টার্ন দেখা যায়। একই সঙ্গে ঈগল, শকুন, ইত্যাদি প্রজাতির পাখিও লক্ষণীয়। এ ছাড়া সুন্দরবনের নদীগুলোতে সহজে দেখা যায় দুই প্রজাতির ডলফিন। এ সূত্র ধরে উল্লেখ্য, ওপরের দিকের নদীগুলোতে গাঙ্গেয় শুশুকের সংখ্যা বেশি এবং নিচের দিকে, বিশেষ করে যেসব নদীতে লবণাক্ততা বেশি, সেসব নদীতে ইরাবতী ডলফিন পরিলক্ষিত হয়।
কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হলো- এই প্রকৃতির রক্ষাকবচ ও সৌন্দর্যমণ্ডিত ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবন আজ ধ্বংসের মুখে। নানাভাবে ধ্বংস হচ্ছে এর জীববৈচিত্র্য। ফারাক্কা বাঁধের কারণে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় মিঠা পানির পরিমাণ কমে যাওয়া ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধিজনিত কারণে লবণাক্ততা বাড়ায় এখানকার জীববৈচিত্র্যে অনেক রোগ দেখা দিয়েছে। যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে এ বনের ৭৩ ভাগ ভূমিই গাছশূন্য হয়ে পড়বে। এদিকে এ বনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ রয়েল বেঙ্গল টাইগারেরও অস্তিত্ব সংকটে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, বাঘ গণনায় যে জরিপ করা হয়, সেই সংখ্যা কতখানি নির্ভরযোগ্য, তা প্রশ্নাসাপেক্ষ। অবৈধ শিকার, খাদ্যর অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে বাঘের সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে এক সময়ে সুন্দরবন বাঘশূন্য হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া অবাধে গাছ কাটা, অবৈধ হরিণ শিকার, বিষ দিয়ে মাছ নিধন ইত্যাদির মাধ্যমে কতিপয় অসাধু এবং বিবেকহীন কুচক্রীমহল সুন্দরবনকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে। এদিকে আশপাশে গড়ে ওঠা শিল্প-কলকারখানা, নৌ-যান থেকে নিঃসৃত বর্জ্য ও ইঞ্জিনের বিকট শব্দের কারণে মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে সুন্দরবনের ইকোসিস্টেম।
পরিশেষে এই বলে ইতি টানছি যে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না; যে সুন্দরবন আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যর অন্যতম লীলাক্ষেত্র, তা বলতে গেলে আমাদের মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় অস্তিত্ব ও অর্থনীতির অন্যতম ধারক ও বাহক। সত্যি কথা বলতে কি, সুন্দরবন ধ্বংস মানে আমাদের প্রাকৃতিক অস্তিত্বকে গলা টিপে হত্যা করার সামিল, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই সুন্দরবনকে যথাযথভাবে টিকিয়ে রাখতে আমাদের বিভিন্ন আঙ্গিকে আরও তৎপর হতে হবে।
লেখক: বিশিষ্ট গবেষক, অর্থনীতিবিদ
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা