আপডেট : ২৬ আগস্ট, ২০২৪ ০০:৩৬
২৪ দিনে প্রবাসী আয় ১৭২ কোটি মার্কিন ডলার
নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ দিনে প্রবাসী আয় ১৭২ কোটি মার্কিন ডলার

প্রতীকী ছবি

চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ২৪ দিনে দেশে বৈধ পথে ১৭১ কোটি ৮৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। বাংলাদেশি মূদ্রায় যা ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ। এর মধ্যে গত ৪ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত এসেছে ৩৮ কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, ১১ থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত এসেছে ৬৫ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার এবং ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত এসেছে ৫৮ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি আগস্ট মাসের ২৪ আগস্ট পর্যন্ত দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৭ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৪ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ৭৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩২ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

তথ্য বলছে, আগস্টের ২৪ দিনে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। গত বছরের (২০২৩) আগস্টে ২৪ দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩২ কোটি ডলার।

আলোচ্য আগস্ট মাসের প্রথম ২৪ দিনে ৯ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব। এ ছাড়া রয়েছে বেসরকারি খাতের কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। বিদেশি খাতের ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯১ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বর ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চ মাসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে এসেছে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩তম গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। গভর্নরের দায়িত্ব নিয়ে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি উন্নয়নে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ব্যাংক খাতে টেকসই সংস্কারের জন্য ব্যাংক কমিশন গঠন।

এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার-সংকট কাটাতে আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে। তাতে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের ক্রলিং পেগ ব্যবস্থায় ডলারের মধ্যবর্তীর দাম ১১৭ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলো ডলারের দাম কিছুটা বেশি দিতে পারবে।

ব্যাংকাররা বলছেন, বৈধ পথে প্রবাসী আয় আনাকে উৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে চলতি মাসের বাকি দিনগুলোয় ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার আসা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয় ২৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।