আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৬:৪৯
অনুরোধের ঢেঁকি গিলতে চাই না
জাহাঙ্গীর বিপ্লব

অনুরোধের ঢেঁকি গিলতে চাই না

গুলশান আরা আক্তার চম্পা- চলচ্চিত্রের সিনিয়র অভিনেত্রী। গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের মাধ্যমে চম্পা যেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই ‘মালা’ হয়েই বসে আছেন রুচিশীল দর্শকের মনে। তার সঙ্গে রয়েছে ‘উত্তরের খেপ’, ‘অন্যজীবন’, ‘চন্দ্রগ্রহণ’ ও ‘শাস্তি’ সিনেমায় অভিনয়ের দরুন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বাণিজ্যিক সিনেমাতেও তিনি ছিলেন বেশ জনপ্রিয়। এ নন্দিত তারকার বর্তমান ব্যস্ততাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীর বিপ্লব

চলমান ব্যস্ততা

সত্যি কথা বললে এখন আমার একদমই কোনো ব্যস্ততা নেই। বলতে গেলে কোনো খবরেই নেই আমি। সেই করোনাকাল থেকেই আমি নতুন কোনো কাজ হাতে নিইনি। অবশ্য এ সময়ে অনেকই প্রস্তাব এসেছে- সেগুলো ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ এখন আমি আর অনুরোধের ঢেঁকি গিলে কারও সিনেমায় যুক্ত হতে চাই না। তবে ভালো গল্পের হলে নতুন কাজ করার ইচ্ছে আছে।

যে কারণে অভিনয়ে নেই

এখন সিনিয়র আর্টিস্টদের জন্য সে রকম গল্পই তৈরি হচ্ছে না। সেরকম গল্প হয় না বলেই সিনিয়র আর্টিস্টদের অভিনয় কমে গেছে। সিনিয়র আর্টিস্টদের নিয়ে গল্প হলেও গুরুত্ববিহীনভাবে ক্যারেক্টার তৈরি হচ্ছে। এরকম গুরুত্ববিহীন চরিত্রে কেন সিনিয়র আর্টিস্টরা কাজ করবেন? এ কারণেই আমি অভিনয় করছি না। ভালো কাজ ছাড়া করবও না। আগের আর্টিস্টদের ক্ষেত্রে দেখেন, তখন কিন্তু ভারী ভারী ক্যারেক্টার তৈরি হতো। রাজ্জাক-শাবানার কথাই ধরা যাক। তাদের সেসব চরিত্রের দিকে একবার তলিয়ে দেখেন তো- কীরকম মারাত্মক-ভারী চরিত্রের ছিল! আর এখনকার সিনেমাগুলোতে দেখেন। খুঁজেই পাবেন না।

এখনকার নির্মাতারা

এখনকার নির্মাতাদের মাঝে আমি আশার আলো দেখি। তারা অনেক ভালো ভালো গল্প চুজ করছেন। তারা পার্টিকুলার একটা নায়ক/নায়িকা বেইজ থেকে বেরিয়ে এমনসব ভালো সিনেমা বানাচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সেই ছবিটিইবা গল্পটিই নায়ক বা একটা নায়িকা হয়ে যাচ্ছে। একটা নতুন ডাইমেনশন নিয়ে আসছেন নতুনরা। আমরা অবশ্যই তাদের কাজে আরও ভালো কিছু আশা করতে পারি।

দুই রকম অনুভূতি

যখন নায়িকা ছিলাম আলাদা একটা ফিলিং ছিল। যখন ক্যারেক্টার আর্টিস্ট সেটা আরেক রকম। তবে ক্যারেক্টার আর্টিস্টে গভীরতা বেশি। নায়িকা চরিত্রে যেমন খালি লাইট, লাইট- বা ফান না থাকলেও ক্যারেক্টার আর্টিস্টে গভীরতা বেশি। আবার যখন নায়িকা ছিলাম অনেক সুন্দর-সুন্দর লোকেশনে যেতে হতো। তার অনুভূতি কিন্তু আলাদা। তা এখন মিস করি। সেটাই দারুণ উপভোগের ছিল।

চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ

ভবিষ্যতের বিষয়টা বলা মুশকিল। তবে আমি ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছি। জুনিয়রদের সঙ্গে সিনিয়রদের একটা গ্যাপ আছে কিন্তু। আগের যারা শিল্পী তাদের মধ্যে আছে অভিজ্ঞতা আর নতুনদের মধ্যে আছে নতুন নতুন আইডিয়া- এই দুইয়ের কম্বিনেশনেই কিন্তু ভালো ভালো সিনেমা সৃষ্টি হতে পারে। আমি নিজেও কিন্তু নতুনদের একটা ছবিতে কাজ করেছি ‘বিশ্বসুন্দরী’। ওটাও কিন্তু ভালো ছবি।