আপডেট : ৮ নভেম্বর, ২০২২ ১৫:৪৬
খুলনায় কিশোরী ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের ফাঁসি
খুলনা ব্যুরো

খুলনায় কিশোরী ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের ফাঁসি

খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন বিহারী কলোনীর এক কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও চারজনকে ৮ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আ. ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মোরশেদুল ইসলাম শান্ত ওরফে শান্ত বিশ্বাস, শেখ শাহাদাত হোসেন, রাব্বি হাসান পরশ, মাহামুদ হাসান আকাশ, কজী আরিফুল ইসলাম প্রীতম ও মিম হোসেন। এদের মধ্যে মোরশেদুল ইসলাম শান্ত ওরফে শান্ত বিশ্বাস, শেখ শাহাদাত হোসেন ও কজী আরিফুল ইসলাম প্রীতম পলাতক রয়েছেন। বাকি তিনজন রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনার সময়ে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করায় পর্নগ্রাফি আইনে আসামি নুরুন্নবী আহমেদকে মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে আরও ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল ফরিদ আহমেদ।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দুইদিন আগে মোরশেদুল ইসলাম শান্তর সঙ্গে ওই কিশোরীর পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে ২০১৯ সালের ২৯ জুন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মোবাইল ফোনের মধ্যমে কিশোরীকে ডেকে নেয় শান্ত। খুলনা মহানগরীর সাহেবের কবর খানায় এলাকায় তারা এক সঙ্গে মিলিত হয়।

সেখান থেকে কিশোরীকে নেয়া হয় মামলার অপর আসামি নুরুন্নবীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন বিহারী কলোনীর ভাড়া বাড়িতে। সেখানে কিশোরীকে কাঁচি দিয়ে ভয় দেখানো হয়। পরে সাউন্ড বক্সে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে তাকে ধর্ষণ করে শান্ত। ওই ভিডিও ধারণ করে নুরুন্নবী। পরে তাকে ভয় দেখিয়ে অন্যরাও ধর্ষণ করে।

ধর্ষণ শেষে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সন্ধ্যার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে ওই কিশোরী রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশায় করে বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানায়। ওই রাতেই তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরের দিন ৩০ জুন তার বড় বোন বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

একই বছরের ১৩ নভেম্বর ১০ জন আসামির নাম উল্লেখ করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আইনজীবী ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘এই মামলায় মোট ১৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১৯টি আলামত উদ্ধার করেছিল। তার মধ্যে মাদক ও যৌন কাজে ব্যবহৃত সামগ্রিও পাওয়া যায়। এ ছাড়া ১০ জনের মধ্যে ৫ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া ডিএনএ টেষ্টে ধর্ষণের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। আদালত সন্দেহতীতভাবে ধর্ষণের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়া রায় প্রদান করেছে। আশা করি উচ্চ আদালতেও রায় বহাল থাকবে।’