মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ইছামতী নদীতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ।
গত সোমবার বিকেলে হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীবর্তী বাহাদুরপুর ও ডেগিরচর এলাকাবাসীর আয়োজনে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর এলাকার নদী ইছামতী নদীতে উৎসবমুখর পরিবেশে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর এলাকার মধ্যবর্তী সীমানা দিয়ে বয়ে বলা পদ্মা নদীর শাখা ইছামতী নদীর মোল্লাবাড়ি থেকে শুরু হয়ে বাহাদুরপর পর্যন্ত এই ১ কিলোমিটার নদীপথের মধ্যে নৌকাবাইচ শেষ হয়।
নৌকাবাইচে অংশগ্রহণ করতে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা রঙে ও বিচিত্র সাজে সজ্জিত বাইচের নৌকা জড়ো হতে থাকে। এরপর পর্যায়ক্রমে শুরু হয় বিভিন্ন বাইচের নৌকার সঙ্গে নৌকা প্রতিযোগিতা। আর এই বাইচ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। গ্রাম-বাংলার নৌকাবাইচ উপভোগ করতে নদীর দুই পাড়ে জড়ো হোন হাজারও উৎসুক জনতা। মানুষের করতালি ও হর্ষধ্বনিতে এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে বাহাদুরপুর ও রামকৃষ্ণপুরের ইছামতী নদীর পাড়।
হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল কুদ্দুস জানান, এক যুগের বেশি সময় ধরে ইছামতী নদীতে স্থানীয়রা প্রতিবছর নৌকাবাইচের আয়োজন করে আসছে। তবে করোনার সময় এক বছর নৌকাবাইচ বন্ধ ছিল। মানুষকে আনন্দ দিতে এবং মাদক থেকে দূরে রাখতে প্রতিবছর গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়।
নৌকাবাইচে অংশগ্রহণ করা সোনার চাঁন নৌকার মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মানিকগঞ্জ ও আশপাশের জেলায় নৌকাবাইচের খবর শুনে নৌকা নিয়ে বাইচে অংশ নেই। এতে করে মানুষও অনেক আনন্দ পায় এবং আমারও তৃপ্তি লাগে। তা ছাড়া বাইচের নৌকায় মাল্লা হয়ে বৈঠার তালে তালে নিজেও আনন্দ পাই। আসলে দীর্ঘদিন ধরে নৌকাবাইচের সঙ্গে জড়িত আছি তো।’
নৌকাবাইচে ছিপ, সোনার চাঁন, গায়েনতরী, হাজারী তরী, সোনার তরী ও সুবোধ সন্ন্যাসীর তরী ছাড়া ছোট ছোট কয়েকটি বাইচের নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। নৌকাবাইচে ঘিওর উপজেলার দিয়াইল এলাকার বিল্লালের নৌকা চ্যাম্পিয়ন হয়।
এরপর নৌকাবাইচ শেষে সন্ধায় স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ ছাড়া নৌকাবাইচে অংশ নেওয়া প্রত্যেক নৌকাকে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা