আপডেট : ১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১৬:১০
ইউটিউবের নাটকে বেশ ভিউ হয়
বিনোদন প্রতিবেদক

ইউটিউবের নাটকে বেশ ভিউ হয়

মামুনুর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

মামুনুর রশীদ- দেশের প্রথিতযশা এক নাট্যব্যক্তিত্ব। মঞ্চের পাশাপাশি টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও সুনাম অর্জন করে আসছেন এই বিশিষ্ট নাট্যজন। আরণ্যকের প্রথম নাটক ‘কবর’ নির্দেশনা দিয়েছিলেন মামুনুর রশীদ।

অভিনয় ছাড়াও মাঝে-মধ্যে টিভি নাটকেও নির্দেশনা দেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় ‘চরণ ছুঁয়ে যাই’ নামের নতুন ধারাবাহিক নির্মাণ করছেন মামুনুর রশীদ। নতুন নাটক, চলমান প্রেক্ষাপট ও মঞ্চের বিভিন্ন বিষয়ে বরেণ্য এই ব্যক্তিত্ব মুখোমুখি হন দৈনিক বাংলার-

দেশের চলমান প্রেক্ষাপটে…

আমি মনে করি দ্রুত মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনে ফিরে আসা উচিত। তাই তাড়াতাড়ি মঞ্চের আলো জ্বলা উচিত। জীবন যখন স্বাভাবিক হয়, তার বড় প্রতিফলন সাংস্কৃতিক জীবন শুরু হওয়া। থিয়েটার তো সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে। কাজেই শিল্পকলা একাডেমি আর বন্ধ রাখা উচিত নয়। সবাই নাট্যচর্চায় মুখর থাকুক। মানুষ আবার নাটকমুখী হোক। কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। নাটক দেখার জায়গাগুলো যখন মুখর হবে, তখন দেখা গেল কেউ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করে বসল! এতে দর্শক নাটক দেখায় আগ্রহ হারাবে। ঘাবড়ানোরও ব্যাপার আছে। কারণ, ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে, বিভিন্ন পাঠাগার ও সারা দেশে ২২টি শিল্পকলায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

নতুন নাটক নির্মাণ প্রসঙ্গে…

নাটকের নাম দিয়েছি ‘চরণ ছুঁয়ে যাই’। বলা চলে এটা আমার অনেক দিনে পরিকল্পনা। বছর দুয়েক আগে লেখা শুরু করেছিলাম। শিক্ষার ক্ষেত্রে যে অধঃপতনটা হয়েছে, সেটি তুলে ধরাই ছিল লক্ষ্য। একটা গ্রামের হাইস্কুল। অনেক পুরোনো। ১৯১৭ সালের প্রতিষ্ঠান। অর্ধচন্দ্র ইংলিশ হাইস্কুল। সেই স্কুলটায় প্রাচীন একজন লোক আছে, বাকি সবাই এই সময়ের। স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছে প্রভাবশালী এক লোক, যে আগে এলাকার চেয়ারম্যান ছিলেন। এই স্কুলে নানা অজুহাতে টাকা-পয়সা লেনদেন হয়। একটা কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। এইসব বিষয়ই উঠে এসেছে আমার নতুন ধারাবাহিকে।

নাটকের গল্প ভাবনা…

মূলত সাভারের একটা ঘটনার পর এই নাটক লেখার প্রয়োজন অনুভব করি। একজন শিক্ষককে এক শিক্ষার্থী ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে মাথায় আঘাত করে মেরে ফেলল। সেই ঘটনা আমাকে ভাবিয়ে তুলল। আমি শিখেছিলাম, শিক্ষকের অঙ্গের কোথাও স্পর্শ করা যায় না, শুধু চরণ স্পর্শ করা যায়। সেই জায়গা থেকেই আমি নাটকটি লিখলাম। এটা ৫২ পর্বের ধারাবাহিক। প্রচারিত হবে চ্যানেল আইয়ে।

টিভি নাটকের হালচাল…

টিভি নাটক জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে এটা সত্য, আবার ইউটিউবের নাটকগুলোর বেশ ভিউ হয়, এটাও সত্য। এর কারণ, ইউটিউবের নাটকগুলো যখন খুশি তখন দেখা যায়, কিন্তু টিভি নাটকগুলোর একটা টাইমলাইন আছে। ওই সময়ে দেখতে না পারলে আর দেখা হয় না। আরেকটা কারণ হলো, টিভি চ্যানেলগুলোয় প্রিভিউ করে প্রচারের একটা বিষয় থাকে, ইউটিউবে সেটা নেই। ফলে যে কেউ যা খুশি বানিয়ে ইউটিউবে প্রচার করে ফেলতে পারে। একটা ব্যাঙ লাফাচ্ছে, ওই ভিডিওটাও ভিউ হয়ে যাচ্ছে। তার মানে, আমাদের রুচিরও একটা দুর্ভিক্ষ আছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এসব নাটকের দর্শক বেশির ভাগই আমাদের প্রবাসী ভাই-বোন।

উত্তরণের উপায়…

এটা তো খুব কঠিন। কঠিন এই কারণে যে, কোনো টেলিভিশনে এখন থিংকট্যাংক নেই। রিসার্চের কোনো জায়গা নেই। যার যার মতো করে কাজ করে। রিসার্চের জায়গাটা একমাত্র হয়েছিল একুশে টেলিভিশনে, সে কারণে তখন ওই চ্যানেলের অনুষ্ঠানগুলোও মানুষের নজর কেড়েছিল, মন জয় করেছিল। পরে এই চ্যানেলের কর্মীরা অন্য চ্যানেলে গিয়ে নিউজটা ভালো করেছেন, কিন্তু যেসব অনুষ্ঠান মানুষের চিন্তাচেতনা বা মননের উন্নয়ন ঘটাত, তেমন অনুষ্ঠান খুব একটা করা যায়নি।