মাদকের কারণে কীভাবে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়, কীভাবে ধ্বংস হয়ে যায় পুরো পরিবার- তিনি দেখেছেন তার ছোটবেলায়। তাই তো যৌবনে এসে নামলেন মাদকবিরোধী প্রচারণায়। হেঁটে পুরো দেশ ঘুরে চালাবেন মাদক ও বৃক্ষনিধন-বিরোধী প্রচারণা। সেই সঙ্গে সবাইকে উৎসাহিত করবেন রক্তদানে।
এ সাহসী উদ্যোগ যিনি নিয়েছেন, তিনি হলেন মোহাম্মদ ইকবাল মণ্ডল ওরফে ইউসূফ (২২)। গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজার শহীদ মিনার থেকে হেঁটে দেশের ৬৪ জেলা পাড়ি দেয়ার মিশন শুরু করেছেন এ কলেজ-শিক্ষার্থী। ৫৫ দিনে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দেবেন তিনি। তার এ মিশন শেষ হবে রাজবাড়ীতে।
প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৫৫ কিলোমিটার পাড়ি দেয়ার কথা রয়েছে তার।
ইকবাল রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার তফাদিয়ান গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ দেলোয়ার মণ্ডলের ছেলে। রাজবাড়ী ড. আবুল হোসেন কলেজে ডিগ্রিতে পড়ছেন তিনি।
জানতে চাইলে ইকবাল দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মাদকের ফাঁদে পা দিয়ে যেন আর একটি জীবনও নষ্ট না হয়, সেটিই আমার চাওয়া। আর সেই সঙ্গে তরুণদের মানবিক ও প্রকৃতিপ্রেমিক করতে রক্তদান কর্মসূচি ও বৃক্ষনিধনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাব আমি। একজন তরুণও যদি আমার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়, সেটিই হবে আমার পাওয়া।’
কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে নয়। নিজ উদ্যোগে এ মিশন জানিয়ে ইকবাল বলেন, ‘এলাকার বড় ভাই ও নিজের উদ্যোগে এ যাত্রা শুরু করেছি। রোডম্যাপ তৈরি করে আমি সহজে এ মিশন শেষ করব। কক্সবাজার থেকে আমি বান্দরবান যাব। দুই দিনে প্রায় ১০৫ কিলোমিটার হেঁটে বান্দরবান পৌছাব। সেখান থেকে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি। এভাবে ৬৪ জেলা ঘুরব।’
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা হাঁটবেন তিনি। তারপর যেখানে থামবেন, সেখানে যদি কোনো সরকারি ডাকবাংলো বা কোনো আবাসিক হোটেল পান, সেখানে রাত যাপন করবেন। তারপর আবারও হাঁটা শুরু করবেন। এ যাত্রাপথে কোনো সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য পুলিশের বিশেষ শাখা সিআইডির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
এর আগেও ইকবাল ২৪ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে খুলনা থেকে রাজবাড়ী গিয়েছিলেন, যা থেকে তার উৎসাহটা আরও বেড়ে যায়। তার পরই ৬৪ জেলা পাড়ি দেয়ার পরিকল্পনা নেন ইকবাল।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা