আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ২০:৫০
‘হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা যাবে না’
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

‘হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা যাবে না’

নাঈম কাসেম

হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন কোনোভাবেই নিরস্ত্র হবে না। হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা যাবে না।’ গত শুক্রবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। নাঈম কাসেম কঠোর ভাষায় জানিয়ে দেন, ‘যারা আমাদের অস্ত্র কেড়ে নিতে চায়, তারা ইসরায়েলি স্বার্থে ষড়যন্ত্র করছে’। তার ভাষায়, ‘এই অস্ত্রই আমাদের স্বাধীনতা এনেছে।’

আল-মানার চ্যানেলে সম্প্রচারিত ভাষণে নাঈম কাসেম বলেন, ‘হিজবুল্লাহর অস্ত্র লেবাননের প্রতিরোধের মূল স্তম্ভ। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীই দেশকে মুক্ত করেছে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে এবং আজও ইসরায়েলের আগ্রাসনকে প্রতিহত করে চলেছে।’

তার ভাষায়, ‘যারা আমাদের নিরস্ত্র করতে চায়, তারা আসলে দক্ষিণ লেবাননকে দখলের পথে ইসরায়েলের জন্য পথ তৈরি করতে চায়।’ হিজবুল্লাহ মহাসচিব এ সময় জানান, লেবাননে যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল ২ হাজার ৭০০-এরও বেশিবার আগ্রাসন চালিয়েছে। আমাদের প্রতিরোধ ছাড়া এই আগ্রাসন থামত না।

তিনি আরও জানান, হিজবুল্লাহ সব সময় যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে চলেছে। তবে দখলদার ইসরায়েল তা একের পর এক ভেঙে চলেছে। মার্কিন চাপ ও অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের বিষয়ে নাঈম কাসেম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র লেবাননে নিজেদের ছায়া প্রশাসন বজায় রাখতে চায়। তারা আমাদের অস্ত্র কেড়ে নিতে চায়, যাতে লেবানন দুর্বল হয় এবং ইসরায়েল সহজেই দেশটিকে গ্রাস করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কাউকেই ভয় পাই না। আমাদের প্রতিরোধ নীতি অব্যাহত থাকবে। আমেরিকার হুমকিতে নয়, আমাদের জনগণের অধিকার রক্ষার স্বার্থে আমরা এই নীতি বজায় রাখব।’

শেখ কাসেম তার বক্তব্যে ইয়েমেনের হুতি আনসারুল্লাহ গোষ্ঠীকেও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা ইয়েমেনকে স্যালুট জানাই- যারা আজ পুরো বিশ্বের হয়ে মার্কিন-ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে এবং প্রতিরোধ ‍সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।’

সেই সঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সংলাপ সফল হবে এবং অঞ্চল শান্তির পথে এগোবে। কিন্তু শর্ত একটাই- ‘ইসরায়েলকে লেবানন থেকে পিছু হটতে হবে’।

শেখ নাঈম কাসেমের এই বক্তব্য একদিকে যেমন হিজবুল্লাহর আপসহীন প্রতিরোধ নীতির পুনর্ব্যাখ্যা, তেমনি এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভেতরকার জিওপলিটিকাল লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যেখানে গোটা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলকে নিরস্ত্রীকরণের পথে ঠেলে দিতে চায়, সেখানে হিজবুল্লাহ বলছে- অস্ত্রই নিরাপত্তা।

তাদের বক্তব্যের প্রকারান্তরে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, যতদিন ইসরায়েল তার আগ্রাসন চালিয়ে যাবে, ততদিন প্রতিরোধও চলবে।