সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় বিএনপির এক আলোচনা সভা শেষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষের বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। ঘটনাটির জন্য বিএনপিকে দুষছে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বিএনপি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদ, সিরাজগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মুস্তাফিজ ও কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরন্নবী প্রধানও রয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির জনসভা। সভা সফল করতে আজ কামারখন্দে দলীয় কার্যালয়ে আমরা আলোচনা সভা করি। সেখানে কেন্দ্রীয় নেত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া, জেলা বিএনপির সভানেত্রী রুমানা মাহমুদসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।’
এই বিএনপি নেতার দাবি, সভা শেষে দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে তারা রেলওয়ে স্টেশনে গেলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। তারা সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদের গাড়ি ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশ তাদের (বিএনপি) ওপর ছররা গুলি চালায় বলেও অভিযোগ করেন বাচ্চু। তিনি জানান, এ ঘটনায় রুমানা মাহমুদ ও তিনি নিজেসহ বিএনপির অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন শেখ বলেন, ‘বিএনপির অভিযোগ সঠিক নয়। তাদের নিজেদের মধ্যেই গ্রুপিং রয়েছে। নিজেদের দুই গ্রুপে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে স্টেশন এলাকায় আওয়ামী লীগের ৬-৭ জন নেতাকর্মীর ওপর তারা হামলা চালিয়ে আহত করে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামারখন্দ থানার ওসি নুরন্নবী প্রধান বলেন, ‘ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলাকালে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে যায়। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। বাধ্য হয়ে ছররা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ।’ এ ঘটনায় তিনি নিজে আহত হয়েছেন বলেও জানান।
সহকারী পুলিশ সুপার আদনান মুস্তাফিজ বলেন, ‘বিএনপি তাদের প্রোগ্রাম শেষ করে জামতৈল স্টেশন এলাকায় দোকান-পাট ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর শুরু করে। বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তাদের হাতে (বিএনপি) ধারালো অস্ত্রও ছিল। তাদের হামলায় আমি ও থানার ওসিসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হই।’ তিনি বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা