আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:৩৮
কঠিন ম্যাচ, অর্জনেরও
ক্রীড়া ডেস্ক

কঠিন ম্যাচ, অর্জনেরও

শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় মাঠে নামবে ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কো।

কঠিন তো বটেই। এমন এক ম্যাচ, যা দুই দলের কেউই খেলতে চায়নি। মাঠে নামার সময়ও খেলোয়াড়দের মনে হতাশা থাকবে রোববার নিয়ে। ইশ, যদি এক দিন পর মাঠে নামা যেত!

এক দিন পর মাঠে নামা মানে, বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামা। মাত্র এক ম্যাচ আগেও যে স্বপ্ন এই ফুটবলারদের এত দূর তাড়িয়ে এনেছে, সে স্বপ্নটা ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়ার পর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী নামের প্রায় প্রীতি ম্যাচ খেলতে নামার জন্য অনুপ্রেরণা পাওয়া কঠিন।

মরক্কোর জন্য অবশ্য সেটাও কম পাওয়া হবে না। প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে তারা। গ্রুপ পর্বে যে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল দুই দলের, মরক্কো ও ক্রোয়েশিয়ার জন্য বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচও তা-ই হয়ে থাকছে। গ্রুপ পর্বে ম্যাচ অমীমাংসিত ছিল, শ্রেষ্ঠত্বের প্রশ্ন এই ম্যাচে মিটিয়ে নিতে পারলে প্রথম আফ্রিকার দেশ হিসেবে তৃতীয় হওয়ার গৌরবও হয়ে যাবে মরক্কোর।

মরক্কো কোচ ওয়ালিদ রেগরাগিও জানেন কীর্তিটা কত বড়। কিন্তু গতকালও তার মনে ফাইনালে যেতে না পারার আক্ষেপ শোনা গেছে, ‘আমি বুঝি চারের চেয়ে তিন হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমার দৃষ্টিতে আমরা ফাইনালে উঠিনি। আমরা রোববারের ফাইনাল খেলতে চেয়েছি, আগামীকাল (আজকের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ) নয়।’

হতাশ হলেও বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন রেগরাগি। দুর্দান্ত এক বিশ্বকাপের শেষটা যেন স্মরণীয় হয়, সেটা নিশ্চিত করতে খেলোয়াড়দের অন্যভাবে উদ্বুদ্ধ করছেন তিনি, ‘আমার খেলোয়াড়দের বলেছি, এটা বিশ্বকাপে সপ্তম ম্যাচ। কোনো মরক্কোর সমর্থককে যদি বিশ্বকাপের আগে বলতাম, ১৭ ডিসেম্বর আমরা নিজেদের ৭ নম্বর ম্যাচ খেলব, তারা গর্ববোধ করত।’

মরক্কোর মতো দেশের জন্য এমন এক ম্যাচও তো কম প্রাপ্তি নয়। সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি তো বিশ্বমঞ্চে বড় পরাশক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রায় শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা, ‘মরক্কো ২০ বছরে বিশ্বকাপে ছয়টি ম্যাচ খেলেছে আর এবার এক মাসে ছয় ম্যাচ। এটা অমূল্য এক অভিজ্ঞতা। মনে হচ্ছে আমরা দুই বা এর বেশি বিশ্বকাপ খেলেছি। অভিজ্ঞতার দিক থেকে দারুণ।’

মরক্কোর আজ হারানোর কিছু নেই। ক্রোয়েশিয়ার কিছু পাওয়ার আছে? আজ জিতলেও বিশ্বকাপে নিজেদের সেরা সাফল্য ছোঁয়া হবে না। গতবারই ফাইনাল খেলেছে দলটি। কিন্তু কোচ দালিচ সেমিফাইনালে হারের পরই বলে রেখেছেন, তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে এক বিন্দুও ছাড় দেবেন না।

২০২৪ ইউরো নিয়ে এরই মধ্যে পরিকল্পনায় নেমে পড়া দালিচ বলেছেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের বলেছি মাথা উঁচু রাখতে। সর্বোচ্চ দিয়েছে- এ নিয়ে গর্ব করতে এবং তৃতীয় স্থানের জন্য লড়ার প্রস্তুতি নিতে। মানসিকভাবে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।’

ম্যাচের ফল যা-ই হোক, এ বিশ্বকাপকে সফল বলেই মানবেন দালিচ। বিশ্বকাপের আগে যে দল গ্রুপ পর্ব পেরোবে বলে মনে করেনি কেউ, সেই দলের সেমিফাইনাল খেলার কীর্তি ভুলে যেতে মানা করেছেন ক্রোয়াট কোচ, ‘বিশ্বকাপের আগে কেউ যদি প্রস্তাব দিত (সেমিফাইনাল খেলে বাদ পড়ার), আমরা তা-ই হাত পেতে নিতাম। ক্রোয়েশিয়া দলের জন্য এটা দারুণ সাফল্য এবং আমরা গর্বিত।’

আজ সে গর্ব আরেকটু বাড়িয়ে নেয়ার পালা। রেগরাগি চাইছেন যে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের এই দুর্দান্ত যাত্রা শুরু হয়েছিল, সে ম্যাচটায় এবার জয় পাক তার দল, ‘প্রথম ম্যাচ নিয়ে অনেক দ্বিধা ছিল। এবার দুই দলই জিততে চাইবে এবং এটা দারুণ এক ম্যাচ হবে।’

তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের ইতিহাসও তা-ই বলে।