মোবাইল ফোন চুরি-ছিনতাই ঠেকাতে শুধু মোবাইল চোরকে নয়, চোরাই মোবাইল ফোন বিক্রয়কারীদেরও গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। গতকাল বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে চোরাই ফোন উদ্ধার ও আটক সংক্রান্ত এক সংবাদ এ কথা জানান তিনি।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘মোবাইল ফোন চুরি বা টান মেরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। পুলিশের কাছে যে ঘটনাগুলো আসে সেগুলো উদ্ধার করা হয় এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে পুনরায় একই কাজে লিপ্ত হন। কারণ চোরাই মোবাইল বিক্রি করতে পেরে তারা এ কাজে উৎসাহ পায়। যারা চোরাই মোবাইল বিক্রি করবে তাদেরকেও প্রচলিত আইনের আওতায় গ্রেপ্তার করা হবে।
চোরাই মোবাইল বিক্রির প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চুরি হওয়া মোবাইলগুলো তিনটি হাত বদল হয়। প্রথমত যে চুরি করে সে মোবাইলভেদে ৪-৮ হাজার টাকায় টেকনিশিয়ান বা কোনো চোরাইফোন ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দেয়।
টেকনিশিয়ান বা চোরাই ফোন ক্রেতা ফোনের পার্সওয়ার্ড বা ফাইন্ড ইউর ফোন, এ অপশনটি চালু থাকলে তার ডিসপ্লে ও কেসিং উচ্চমূল্যে বিক্রি করে। আর এসব অপশন চালু না থাকলে আইএমইআই পরিবর্তন করে আইফোনের ক্ষেত্রে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ও অন্য ফোনগুলো ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।’
অল্প পয়সায় দামি ফোন কেনা-বেচার কথা উল্লেখ করে গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা মোবাইল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘পুরাতন মোবাইল বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি নেই, ব্যবসায়ীরা পুরাতন ফোন বিক্রি করতেই পারেন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কাছে চোরাই মোবাইল পাওয়া গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। যারা বিক্রি করে তারাও অপরাধী। বিক্রেতাদের এ সব অবৈধ কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন তিনি।
মোবাইল ফোন চুরি প্রতিরোধে জনসাধারণকে রাস্তাঘাটে চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্ক থেকে চলাচল করতে অনুরোধ করেন এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। এ ছাড়া রিকশা বা পাবলিক পরিবহনে চলাচলের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে চোরাই মোবাইল ও নগদ টাকাসহ আট সংঘবদ্ধ মোবাইল চোরকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, ‘গত ২৯ এপ্রিল উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দুপুরে ওযু করার সময় এক ব্যক্তির একটি আইফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় ১৬ মে তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়।
থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়া তদন্ত করে শুরু করে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ। সোমবার থেকে ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।’
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মনির হোসেন, মো. মোতাহার হোসেন, মো. সুরুজ হোসেন, মো. শাহজালাল, মো. মেহেদী হাসান, কুমার সানি, মো. হৃদয় ও শামীম ওসমান।
তাদের দেয়া তথ্যে রাজধানীর হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজা থেকে চুরি হওয়া আইফোনটিসহ মোট ১৫৮টি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ এবং নগদ এক লাখ আঠারো হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা