আপডেট : ২ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৭:৪৬
২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনে ১৩৫ জনের মৃত্যু
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনে ১৩৫ জনের মৃত্যু

সদ্যবিদায়ী ২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৩৪ শ্রমিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩৭ জন। এর মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন ১৩৫ শ্রমিক, আর আহত হয়েছেন ১৫৫ জন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস্) এক জরিপ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি বিষয়ে সংবাদপত্রভিত্তিক বিলস্‌ জরিপ-২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সোমবার প্রকাশিত হয়। দেশের ১৩টি জাতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে শ্রমিকের মৃত্যু ২ শতাংশ কম হয়েছে উল্লেখ করে বিলসের জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৫৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়, আহত হন ৫৯৪ শ্রমিক। এর আগের বছর ২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৭২৯ শ্রমিকের মৃত্যু হয়, আহত হন ৪৩৩ শ্রমিক।

বিলসের প্রতিবেদন বলছে, গত বছর নিহত ১ হাজার ৩৪ শ্রমিকের মধ্যে ১ হাজার ২৭ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী শ্রমিক। গত বছর বিভিন্ন শ্রমখাতে ১৯৬টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। সবচেয়ে বেশি শ্রমিক অসন্তোষ ঘটে তৈরি পোশাকখাতে।

বিদায়ী বছরে কর্মক্ষেত্রের দুর্ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, বজ্রপাত, অগ্নিকাণ্ড, সমুদ্রে ঘূর্ণিঝড়ে ট্রলার ডুবি, পড়ন্ত বস্তুর আঘাত, মাথায় কিছু পড়া, বিষাক্ত গ্যাস, নৌ দুর্ঘটনা, দেয়াল/ছাদ ধসে পড়া, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

বিলসের হিসাবে, গত বছর কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হন ৩৩৮ জন শ্রমিক। এর মধ্যে ২৯৪ জন পুরুষ এবং ৪৪ জন নারী। ৩৩৮ জনের মধ্যে ১৩৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন ১৫৫ জন। এছাড়া নিখোঁজ ৩৪ জন, আত্মহত্যা করেন ১ জন, অপহৃত ১৩ জনকে পরে উদ্ধার করা হয়।

পরিবহন খাতে সবচেয়ে বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয় বলে বিলসের তথ্যে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, খাত অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ৪৯৯ জন (৪৮ শতাংশ) শ্রমিকের মৃত্যু হয় পরিবহন খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৮ জন (১১ শতাংশ) শ্রমিকের মৃত্যু হয় নির্মাণ খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১২ জন (১১ শতাংশ) শ্রমিকের মৃত্যু হয় কৃষিখাতে। এ ছাড়া দিনমজুর ৪৬ জন (৫ শতাংশের কম), কনটেইনার ডিপোতে ৪৪, মৎস্য ও মৎস্য শ্রমিক ৪৩ জন, ইলেকট্রিক শ্রমিক ২২ জন, নৌ-পরিবহন খাতে ১৫ জন, হোটেল রেস্তোরাঁয় ১২ জন, ইটভাটা শ্রমিক ১০ জন, জাহাজ ভাঙা শিল্প শ্রমিক ৭ জন, কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে ৬ জন এবং অন্যান্য খাতে ১০০ শ্রমিক নিহত হন।