আপডেট : ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৩:১৮
আল-আকসায় ইসরায়েলের মন্ত্রী, ‘নজিরবিহীন উসকানি’ বলছে ফিলিস্তিন
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আল-আকসায় ইসরায়েলের মন্ত্রী, ‘নজিরবিহীন উসকানি’ বলছে ফিলিস্তিন

মঙ্গলবার আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে যান ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির। ফাইল ছবি।

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির যাওয়ার ঘটনায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ‘নজিরবিহীন উসকানি’ বলে মনে করছে ফিলিস্তিনিরা। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। খবর: আল-জাজিরার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার মসজিদটিতে যান ইসরায়েলের ‘উগ্র ডানপন্থি’ মন্ত্রী বেন-গভির। এ সময় তাকে কঠোর নিরাপত্তার সঙ্গে এলাকাটি ঘুরে দেখতে দেখা যায়।

গত সপ্তাহেই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শাসিত ইসরায়েলের নতুন সরকারে শপথ নেন বেন-গভির। ইসরায়েলি এই মন্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছেন না দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়ার ল্যাপিডও। সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, বেন-গভিরের আল-আকসা সফর সহিংসতার জন্ম দেবে।

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এক প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এটিকে ‘নজিরবিহীন উসকানি’ এবং সংঘাতের জন্য ‘বিপজ্জনকভাবে বাড়াবাড়ি’ হিসেবে দেখছেন।

মক্কা এবং মদিনার পর মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র স্থাপনা আল-আকসা। যেখানে শুধু মুসলিম ধর্মের লোকদেরই প্রার্থনা (নামাজ) করার অনুমতি রয়েছে। তবে বেন-গভির এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে চান এবং আল-আকসায় যাতে ইহুদিরাও প্রার্থনা করতে পারে, সেই অনুমতির ব্যবস্থা করতে চান। যদিও এ নিয়ে ইহুদি সম্প্রদায় এবং ধর্মীয় নেতাদের পক্ষ থেকে বাধা এবং নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছেন কট্টর জাতীয়তাবাদী বেন-গভির।

ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা বেন-গভিরের কর্মকাণ্ড স্থিতাবস্থার পরিবর্তনের ঘটাতে পারে। কারণ, উগ্র-ডানপন্থি ইসরায়েলিরা অনেক দিন ধরেই আল-আকসা মসজিদের অবশিষ্টাংশে একটি সিনাগগ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম বলছে, আল-আকসায় যাওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে নেতানিয়াহু বেন-গভিরের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন।

এর আগে ২০০০ সালে সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারনের আল-আকসায় প্রবেশের ঘটনা দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদার (বিদ্রোহ) জন্ম দেয়।

ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এর আগে বলেছিল, তারা বেন-গভিরের পরিকল্পিত সফরের যেকোনো পরিণতির জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করবে।

সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হামাসের মুখপাত্র আবদেল-লতিফ আল-কানোয়া বলেছেন, ‘আল-আকসা মসজিদে যেকোনো ধরনের উত্তেজনা পরিস্থিতির বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। আর এর জন্য দখলদার সরকার দায়ী হবে।’

বেন-গভির ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে উগ্র-ডানপন্থি মনোভাব পোষণ করেন এবং তাদের বাস্তুচ্যুত করার আহ্বান জানান। তিনি বারবার আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।

এই রাজনীতিবিদ শেখ জাররাহ আশপাশে একটি অফিস স্থাপন করার পরে অধিকৃত শহরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। যেখানে ফিলিস্তিনিরা ব্যাপকভাবে বহিষ্কারের মুখোমুখি হয়েছিল।

গত নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ একটি ফাঁস হওয়া অডিওতে সতর্ক করে বলেছিলেন বেন-গভিরের এই উগ্র-ডানপন্থি মনোভাব নিয়ে ‘পুরো বিশ্ব চিন্তিত।’

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনারা অধিকৃত পশ্চিম তীরে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এ কথা জানিয়েছেন। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।