বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিনকে অপহরণ ও হত্যা মামলার আসামি আবুল কাশেম চৌধুরী ওরফে কাশেম চেয়ারম্যান ২০ বছর পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফরিদ আহমেদ জানান, মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নারগিস আক্তারের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন কাশেম চেয়ারম্যান। তিনি জামিন আবেদন করলে আদালত সে আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৪ জুলাই রাতে নগরের চকবাজারে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চান্দগাঁও থানা এলাকায় নিজের বাসায় ফেরার পথে অপহরণের শিকার হন জামাল উদ্দিন। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন।
অপহরণের ঘটনায় জামাল উদ্দিনের ছেলে চৌধুরী ফরমান রেজা লিটন চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। পরিবারের দাবি ছিল, জামাল উদ্দিন সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হওয়ায় তার মনোনয়ন ঠেকাতে ও এক কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায় করতে তাকে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণের টাকা দিতে দেরি হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়।
জামাল উদ্দিনকে অপহরণের দুই বছর পর আনোয়ারা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ওই সময়ের চেয়ারম্যান শহীদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফটিকছড়ির কাঞ্চননগর পাহাড়ি এলাকা থেকে জামাল উদ্দিনের কঙ্কাল উদ্ধার হয়। এর এক বছর পর এ মামলায় ২০০৬ সালে দুই দফায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। প্রতিবারই নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ।
২০০৭ সালে আসামিপক্ষের এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলার স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। পরে ২০১১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হলে মামলাটি ফের চালু হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর অন্তত তিন আসামি আদালতে জবানবন্দি দেন। এই তিনজনের জবানবন্দিতে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে কাশেম চেয়ারম্যানের নাম উঠে আসে।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি রিদওয়ানুল বারী বলেন, ‘আদালতে যারা জবানবন্দি দিয়েছেন সবার কথায় খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে কাশেম চেয়ারম্যানের নান উঠে এসেছে। ২০ বছর হত্যা মামলার সেই আসামি আত্মসমর্পণ করেছেন। আমরা আদালতকে বোঝাতে সমর্থ হয়েছি। তাই আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এখন যেহেতু কয়েকজনের জবানবন্দি আমাদের কাছে আছে, তাই মামলাটি দ্রুত শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি।’
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা