আপডেট : ২৬ আগস্ট, ২০২২ ১১:৫৬
পুতিনকে কাঠগড়ায় তুলতে চায় ইউক্রেন

পুতিনকে কাঠগড়ায় তুলতে চায় ইউক্রেন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা প্রভৃতি অভিযোগের তদন্ত করছে। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন আক্রমণ করার দায়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে চায় কিয়েভ। এ লক্ষ্যে তারা একটি বিশেষ আন্তার্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এদিকে, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গত বুধবার ইউক্রেনের দিনিপ্রোপেত্রাভস্ক অঞ্চলের চ্যাপলাইন শহরের একটি রেলস্টেশনে অন্তত ২৫ জন নিহত ও ৩১ জন আহত হয়েছে।

কিয়েভের কর্তৃপক্ষ ভালো করেই জানে যে, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারলেও পুতিনকে সেখানে হাজির করা প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার। তবু ইউক্রেনের কর্তাব্যক্তিরা মনে করেন, এ ধরনের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচারের আয়োজন করলে পুতিন ও তার সহযোগীদের বিশ্ববাসীর  কাছে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে।

বিবিসি জানায়, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক চলাকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ভিডিওবার্তায় চ্যাপলাইনের রেলস্টেশনে রুশ হামলার কথা জানান। তবে রাশিয়া এ হামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। জেলেনস্কি বলেন, পাঁচজন ট্রেনের ভেতরই পুড়ে মরেছে। হামলায় নিহতদের মধ্যে ৫ বছরের এবং ১১ বছর বয়সী দুই শিশুও রয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন সাত মাসে গড়িয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালানোর একাধিক অভিযোগ করেছেন জেলেনস্কি। তবে রাশিয়া এ ধরনের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

এএফপি জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা প্রভৃতি অভিযোগের তদন্ত করছে। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেন আইসিসির সদস্য না হওয়ায় আগ্রাসন চালানোর অভিযোগ তদন্ত করতে পারবে না আইসিসি। তাই পুতিনের বিচার করতে বিশেষ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে চায় ইউক্রেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের আওতাধীন প্রশাসনের উপপ্রধান আন্দ্রি স্মিরনভের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ইউরোপের একাধিক দেশ ট্রাইব্যুনাল গঠনে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানান স্মিরনভ।

এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশলেট গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভাষণে ইউক্রেনে  হামলা বন্ধ করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আশপাশের অঞ্চলকে অবিলম্বে নিরস্ত্রীকরণ এলাকা হিসেবে নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। আর জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘অর্থহীন যুদ্ধ’ লাখ লাখ মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে। 

যুদ্ধের বিভীষিকার মধ্যে গত বুধবার ইউক্রেন স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে। তবে রাশিয়ার হামলার আশঙ্কায় দিনটিতে কোনো সভা-সমাবেশ বাতিল করে ইউক্রেন। রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে জানায় জেলেনস্কি সরকার। যদিও বিবিসি জানায়, তারা ইউক্রেনের সরকারের দেয়া তথ্যের সত্যতা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি। ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে চলমান যুদ্ধে রুশ অধিকৃত ভূমি পুনরুদ্ধার করতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। সূত্র: এএফপি, বিবিসি