গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন ৭৮ হাজার ২৮৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির (জাপা) গোলাম শহীদ রনজু পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৭৫২ ভোট ভোট।
বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা পরিষদ হলরুমের ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্রে এই ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল মোত্তালিব ও কামরুল ইসলাম।
চরম অনিয়মের কারণে বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে দ্বিতীয় দফায় বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা চলে বিরতিহীনভাবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৪ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রে এসব ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
এই নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মাঠে সক্রিয় দেখা যায় আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান রিপন (নৌকা) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী (জাপা) এএইচএম গোলাম শহিদ রনজুকে (লাঙ্গল)। ভোটের মাঠে প্রচারণায় দেখা যায়নি বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমানকে (ট্রাক)।
এছাড়া গত ২৫ ডিসেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) এক সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
গাইবান্ধা-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আসনটিতে ১২ অক্টোবর উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে প্রথমে গোপন কক্ষে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করায় ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং সাঘাটা উপজেলার রামনগর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরে দফায় দফায় ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে ইসি। এক পর্যায়ে পুরো নির্বাচনই স্থগিত করে দেয়া হয়।
অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ৫১টি ভোটকেন্দ্রের ঘটনা তদন্ত করে গত ২৭ অক্টোবর ইসিকে প্রতিবেদন দেয়। পরে বাকি ৯৪টি ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ছিল কি না, তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় ইসি। ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় কমিটি ওই প্রতিবেদন জমা দেয়।
তদন্তে দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের পাঁচ উপপরিদর্শক (এসআই), ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাসহ ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ নির্বাচনী বিশেষ আইন অনুসারে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির সিদ্ধান্ত দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
তদন্ত শেষে গত ৬ নভেম্বর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ৪ জানুয়ারি এই আসনের উপ-নির্বাচনে তারিখ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা