রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দ দেয়া সব হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট বিভাগের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) আপিলের অনুমতি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। ফলে হাতিরঝিল থেকে আপাতত কোনো ব্যবসায়িক স্থাপনা সরাতে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে রাজউকের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী মো. ইমাম হাছান। অপরপক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ী প্রকল্পে লে আউট প্ল্যানের নির্দেশনার বাইরে কতিপয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করার ব্যাপারে রাজউকের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১৮ সালে এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেন। ওই রুলের শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৩০ জুন হাইকোর্ট একটি রায় দেন। এতে বলা হয়, হাতিরঝিলের পানি এবং এর নজরকাড়া সৌন্দর্য অমূল্য সম্পদ। এ অমূল্য সম্পদকে ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না।
রায়ে হাইকোর্ট যে চারটি নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো হলো সংবিধান, পরিবেশ আইন, পানি আইন এবং তুরাগ নদসম্পর্কিত রায় অনুযায়ী রাজধানী ঢাকার ফুসফুস হিসেবে পরিচিত বেগুনবাড়ী খালসহ হাতিরঝিল এলাকাকে জনগণের জাতীয় সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করতে হবে, হাতিরঝিল এলাকায় হোটেল, রেস্তোরাঁসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ এবং নির্মাণ সংবিধান, পরিবেশ আইন, পানি আইন এবং তুরাগ নদীসম্পর্কিত রায় অনুযায়ী বেআইনি এবং অবৈধ; হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দ দেয়া সব হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অবৈধ এবং এখতিয়ারবহির্ভূত এবং বর্তমান রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে সব হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করতে হবে।
গত বছরের শেষের দিকে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এরপর রাজউক আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। এ আবেদনের পর গত ৭ নভেম্বর হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দেন আপিল বিভাগ।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা